শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুরের শ্রবরদীতে স্ত্রী-শাশুড়িসহ তিনজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি মিজানুর রহমান ওরফে মিন্টুকে (৪০) আমগাছের আগা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার রাতে ছুটির দিনে দায়িত্বে থাকা শেরপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূর-ই-জাহিদের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে এ জবানবন্দি দেন তিনি। এর আগে ওই দিন ভোরে অভিযান চালিয়ে শ্বশুরবাড়ির পাশেই একটি আমগাছের আগা থেকে মিন্টুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আজ শনিবার দুপুরে হত্যার দায় স্বীকারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস ও কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক খন্দকার শহীদুল হক। জবানবন্দিতে মিন্টু স্ত্রী, শাশুড়িসহ তিনজনকে হত্যাসহ ছয়জনকে কোপানোর কথা স্বীকার করেন।
এ ঘটনায় অন্য আসামিরা হলেন গেরামারা এলাকার ইউপি সদস্য সবুজ মিয়া, ছোট গেরামারা এলাকার মো. জাফরের স্ত্রী ময়লা বেগম ও খামারপাড়া কাকিলাকুড়া এলাকার আলমাছের ছেলে নিজাম উদ্দিন।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার এজাহারনামীয় পলাতক অপর তিন আসামিকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ বলছে, তাঁদের গ্রেপ্তারে জোর অভিযান চলছে। এদিকে শুক্রবার রাতে নিহত তিনজনের জানাজা ও দাফন নিজ এলাকায় সম্পন্ন হয়েছে। ওই ঘটনায় এলাকায় শোকের পাশাপাশি আতঙ্কও নেমে এসেছে। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী দ্রুত ঘাতক মিন্টুর ফাঁসি দাবি করেছেন। এর আগে শুক্রবার বিকেলে নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের পটল গ্রামে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
মামলার বাদী ও নিহত মনিরার ছোট বোন মিনারা বলেন, ‘আমার মা ও বোনকে কোপায়া নৃশংসভাবে মারছে মিন্টু। আমার ভাই আর বাবাকেও আহত করেছে। আমি তাঁদের হত্যাকারী মিন্টুর ফাঁসি চাই।’
উল্লেখ্য, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে গত বৃহস্পতিবার রাতে শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের পটল গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে হামলা চালিয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রী মনিরা বেগম (৩৫), শাশুড়ি শেফালী বেগম (৫০) ও চাচা শ্বশুর নূর মোহাম্মদ ওরফে মাহমুদকে (৬৫) হত্যা করে জামাতা মিজানুর রহমান মিন্টু। তিনি পার্শ্ববর্তী গেরামারা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে হাঁস-মুরগি বিক্রেতা। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন মিন্টুর শ্বশুর মনু মিয়া, শ্যালক শাহাদত হোসেন ও মাহমুদের স্ত্রী ছাহেরা বেগম। তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মনু মিয়ার অবস্থাও সংকটাপন্ন। ওই ঘটনায় মিন্টু মিয়াকে প্রধান আসামি করে মোট চারজনের নামে মনিরার ছোট বোন মিনারা বেগম বাদী হয়ে শ্রীবরদী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।