সরকারি গাছ কাটতে গেলে উপজেলা পরিষদের রেজল্যুশন, টেন্ডার ও বন বিভাগের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। কিন্তু এসব না করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে। গাছ কাটার পাশাপাশি আরও কয়েকটি গাছের ডালপালা কেটে ফেলারও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বিআরডিবির অফিস সংলগ্ন জায়গায় ‘উপজেলা প্রশাসন ল্যাবরেটরি স্কুল’ চালু করতে গিয়ে এ গাছগুলো কাটা ও মোড়ানো হয়। অথচ এর আগে ‘বিআরডিবি’ থেকে জমি ভাড়া নিয়ে এখানেই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল ‘ত্রিশাল কিন্ডারগার্টেন’ নামে আরেকটি স্কুল। নতুন স্কুল নির্মাণ করতে ইউএনও মো. আক্তারুজামানের নির্দেশে বন্ধ করে দেওয়া হয় ওই স্কুলটি।
এ বছরের শুরুর দিকে যাত্রা শুরু করা স্কুলের জন্য নতুন ভবনের স্থাপনা নির্মাণকাজের শুরুতেই উপড়ে ফেলা হয় মেহগনি জাতীয় তিন-চারটি চারা গাছ। নতুন ভবনের স্থাপনা নির্মাণ শেষে সম্প্রতি বহু বছরের পুরোনো ৩০-৩৫ ফুট উচ্চতার অনেক গাছের ডালপালা কেটে ফেলা হয়। নির্দিষ্ট কোনো উৎস ছাড়া আনুমানিক ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৭ জন শিক্ষার্থীর ওই স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে গাছ কেটে ফেলায় সমালোচনার মুখে পড়েন ইউএনও।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ফজলে রাব্বি বলেন, ‘ঝড়-তুফানে উপড়ে পড়া কত কত সরকারি গাছ মাটিতে পড়ে থাকছে বছরের পর বছর, অনুমোদন ও আইনি জটিলতায় কেউ কেটে নেওয়ার সাহস দেখায় না। আর ইউএনও আক্তারুজ্জামান সাহেব ইচ্ছেমতো নিধন করছেন সরকারি গাছ। পাওয়ার কী জিনিস!’
ত্রিশাল উপজেলা বিআরডিবির সাবেক চেয়ারম্যান নবী নেওয়াজ সরকার বলেন, ‘ইউএনও কোনোভাবেই স্কুল প্রতিষ্ঠার নামে গাছ কেটে বিআরডিবির বনায়ন উজাড় করতে পারেন না।’
তাঁর প্রতিষ্ঠিত স্কুল প্রাঙ্গণে সরকারি গাছ নিধনের দায় অস্বীকার করে ইউএনও মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণে টেন্ডারভুক্ত গাছের ঠিকাদার আমার অনুমতি ছাড়াই এ কাজ করেছেন। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তবে ঠিকাদার হাসান শহীদ সোহেল জানান, ‘টেন্ডারভুক্ত গাছের বাইরেও ইউএনও স্যারের নির্দেশে উপজেলা প্রশাসন ল্যাবরেটরি স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে দুটি গাছের গোড়া থেকে ৮-১০ ফুট রেখে বাকিটুকু কেটে ফেলা হয়েছে এবং কয়েকটি গাছের ছোটবড় ডালপালা মোড়ানোর কাজ করেছি।’