ঈশ্বরগঞ্জে শিউলি আক্তার (১৯) নামের এক গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগে স্বামী রাজন মিয়া ওরফে রফিকুল ইসলামকে (২১) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্ত্রী শিউলি আক্তার বাদী হয়ে আজ রোববার (১৫ মে) ঈশ্বরগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
মামলার এজাহার ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ঈশ্বরগঞ্জ ইউনিয়নের চরশিহারি গ্রামের রিকশা চালক সাইদুল ইসলামের মেয়ে শিউলি আক্তারের সঙ্গে ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বিয়ে হয়, নেত্রকোনা সদর উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের ঝগড়াকান্দা গ্রামের মৃত লালচাঁন মিয়ার ছেলে রাজন মিয়া ওরফে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। রাজন পেশায় রাজমিস্ত্রির কাজ করেন।
ভুক্তভোগী শিউলির পরিবারের লোকজন জানান, বিয়ের সময় ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়া হলেও গত রমজানের আগে থেকে আবারও যৌতুক চেয়ে শিউলির ওপর নির্যাতন শুরু করে রাজন। শিউলির বাবা একটি মোবাইল কিনে দেন রাজনকে। এর পর ২০ হাজার টাকা ও ঘরের আসবাব যৌতুক হিসেবে চাইলে তা দিতে অস্বীকার করে শিউলি। এরপরই শুরু হয় শিউলির ওপর নির্যাতন। গত (১৩ মে) শুক্রবার শিউলির স্বামী রাজন ও শাশুড়ি জরিনা খাতুন, জা রুমা আক্তার মিলে মারধর করেন।
একপর্যায়ে শিউলির হাত-পা বেঁধে মারধর শেষে শরীরে মরিচের গুঁড়া ডলে দেওয়া হয়। শনিবার রাতে শিউলিকে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার চরশিহারি গ্রামে তাঁর বাবার বাড়ির সামনে ফেলে রেখে পালানোর সময় স্থানীয়রা রাজনকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত রাজনকে থানায় নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিউলি আক্তার বলেন, ‘আমাকে বেধড়ক মারধর করার পর, হাত-পা বেঁধে রাখা হয়। আমি পানি চাইলে মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে পানি দেওয়া হয়। পরে যন্ত্রণায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় হামাগুড়ি দিয়ে বাড়ির পাশে পুকুরের পানিতে পড়ি। পানি থেকে উঠতে চাইলে আমার স্বামী আমাকে আবারও মারধর করে। পরে সেই মারধরের ভিডিও আমার জা রুমা আক্তার তাঁর ফোনে ধারণ করে। আমার স্বামীসহ যারা আমাকে নির্যাতন করেছে আমি তাঁদের বিচার চাই।’
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, নির্যাতনের বিষয়টি অবগত হওয়ার পর ভুক্তভোগীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে থানায় মামলা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।