পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালক সম্রাট হোসেন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। তাঁর লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ বলছে, মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং এই ঘটনায় আটক বন্ধুর স্ত্রী ‘শ্লীলতাহানি থেকে বাঁচতে সম্রাটকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত’ করার কথা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।
দুদিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর আজ শনিবার সকালে ঈশ্বরদী শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী শিলাইদহ নদীর ঘাটপাড়ে প্রাডো গাড়ির ভেতর থেকে সম্রাটের লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি উপজেলা সদরের আলহাজ্ব ক্যাম্পের আবু বক্কারের ছেলে।
লাশ উদ্ধারের পর ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সম্রাটের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’
এ ঘটনায় ঈশ্বরদীর বাঁশেরবাদা এলাকার বাসিন্দা সম্রাটের বন্ধু আব্দুল মমিনের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় মমিন পালিয়ে গেলেও আটক করা হয় তাঁর স্ত্রী সীমা খাতুনকে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সম্রাটকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছেন পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) জিয়াউর রহমান।
সীমার বরাত দিয়ে এএসপি জিয়াউর বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে সম্রাট বন্ধু মমিনের বাসায় গিয়ে ‘মাথা ধরেছে’ বলে বিছানায় শুয়ে পড়েন। তাঁর জন্য ওষুধ আনতে মমিন বাইরে যান। একা পেয়ে সম্রাট তাঁর স্ত্রী সীমার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। রেগে গিয়ে সীমা হাতুড়ি দিয়ে সম্রাটের মাথায় ও গোপানাঙ্গে আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই সম্রাটের মৃত্যু হয়। মোমিন ফিরে এসে সম্রাটের মরদেহ বস্তায় ভরে ওই গাড়িতে তুলে শিলাইদহে রেখে সটকে পড়েন।
এদিকে দুদিন ধরে সম্রাটের সন্ধান না পেয়ে পরিবারের লোকজন গতকাল শুক্রবার ঈশ্বরদী থানায় অভিযোগ দেয়। অভিযোগের পরপরই ফেসবুকে সম্রাটকে খুন করা হয়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। আজ সকালে কুষ্টিয়া লাশের সন্ধান পাওয়ার পরে সম্রাটের বাবা ও প্রাইভেট গাড়ির মালিক তা সম্রাটের লাশ বলে শনাক্ত করে।
ঈশ্বরদী ওসি অরবিন্দ সরকার বলেন, সীমার স্বামী মমিন খান একসময় সম্রাটের সঙ্গে চাকরি করতেন। ঘটনার পর থেকে মমিন পলাতক রয়েছেন।