রংপুর নগরীতে যৌতুকের দাবিতে হালিমা পারভীন (৪৫) নামে এক গৃহবধূকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁর স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে গৃহবন্দী করে ১০ লাখ টাকা দাবি করে নির্যাতন চালায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
গতকাল বুধবার মধ্যরাতে নগরীর ধাপ পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন শ্যামলী লেন এলাকার অনুপম হাউসে নির্যাতনের এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ওই গৃহবধূ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় নির্যাতিতার পরিবার থেকে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
হালিমা পারভীনের পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ২০০০ সালে নগরীর ধাপ শ্যামলী লেন এলাকার ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বাবুর সঙ্গে পীরগঞ্জের হালিমা পারভীনের বিয়ে হয়। এরপর থেকে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে বাবার বাড়ি থেকে ২০ লাখ টাকা আনার জন্য চাপ দিচ্ছিল। পারভীন বাবার কাছ থেকে কয়েক দফায় কয়েক লাখ টাকা এনে দিয়েছেন। কিন্তু বছরখানেক পর আবার নির্যাতন শুরু হয়। এভাবেই প্রায় ২২ বছর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের স্বীকার হয়ে আসছিলেন হালিমা পারভীন। সর্বশেষ বুধবার রাতে ব্যবসার পুঁজি বাড়ানোর জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করেন আলমগীর ও তাঁর পরিবার। এতে আপত্তি জানালে পারভীনের ওপর সবাই মিলে শারীরিক নির্যাতন করে। এতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হালিমা পারভীন বলেন, ‘সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে শান্তির আশায় এতদিন ধরে সংসার করে আসছি। কিন্তু আমার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকদের অমানবিকতা এবং নির্যাতন মোটেও বন্ধ হয়নি। যৌতুকের জন্য প্রায় সময়ই তাঁরা শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল। বুধবার রাতেও আমাকে প্রচণ্ডভাবে শারীরিক নির্যাতন করে বাসায় বন্দী করে রাখে। উপায় না পেয়ে আমি মোবাইলে আমার ভাই-বোনকে বিষয়টি জানাই। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে।’
নগরীর ধাপ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মজনু মিয়া বলেন, ‘আমরা ওই গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়েছি। বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।’
নির্যাতনের অভিযোগ প্রসঙ্গে পারভীনের স্বামী আলমগীর হোসেন বাবুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘এটি সাংসারিক বিষয়। এ অভিযোগ নিয়ে আমার কিছুই বলার নেই।’