নীলফামারীর ডোমার উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখক সমিতির নামে বছরে দেড় কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই অফিসে তিন হাজার ৭৫৮টি দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। দলিল গ্রহীতাদের অভিযোগ অনুযায়ী, এই সময়ে দলিল লেখক সমিতির নামে চাঁদা আদায়ের পরিমাণ দাঁড়ায় এক কোটি ৫০ লাখ ৩২ হাজার টাকা।
বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নয়ানী বাগডোকড়া খামাতপাড়া এলাকার কেশব চন্দ্র রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি দুই শতক জমি রেজিস্ট্রি করেছি। রেজিস্ট্রি বাবদ আমার কাছ থেকে দুই হাজার পাঁচ শ টাকা নিয়েছে। আর দলিল লেখক সমিতির চাঁদা বাবদ নিয়েছে চার হাজার টাকা।
‘এ ছাড়া অফিস খরচ বাবদ এক হাজার পাঁচশ টাকা নিয়েছে তারা। আমার দুই শতক জমি রেজিস্ট্রি করতে মোট আট হাজার টাকা নিয়েছেন দলিল লেখকেরা।’
উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের শমছের হাজী বলেন, ‘জমি রেজিস্ট্রি করার সময় রেজিস্ট্রি খরচ ছাড়াও আমাদের কাছ থেকে সমিতির নামে চার হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। শুনেছি, ওই টাকা নাকি সমিতির সবাই ভাগ করে নেয়।’
একই এলাকার হরিপদ রায় ও হরি কিশোর রায়ও সমিতির নামে দলিলপ্রতি দলিল লেখকদের চার হাজার করে টাকা দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান।
তবে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, এখানে নিয়ম মেনেই জমি রেজিস্ট্রি করা হয়।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ডোমার উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক গোলাম কুদ্দুস আইয়ুব বলেন, কেউ জমি কিনলে দলিল লেখক সমিতির নামে চার হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় মেনে নেওয়া যায় না। দ্রুত এই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও দলিল রেজিস্ট্রির নামে চাঁদা বন্ধের দাবি জানান তিনি।
এই অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়ে জানতে চাইলে কিছু করার নেই বলে ডোমার উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মাহফুজুর রহমান বিষয়টি উড়িয়ে দেন।
আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘দলিল লেখকেরা বাইরে অতিরিক্ত টাকা নিতে পারেন। এটা আমার দেখার বিষয় না।’