উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের উলিপুরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। জনশুমারির কাজে নিয়োগের ব্যাপারে কথা বলার জন্য বাড়িতে ডেকে নিয়ে থেতরাই ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা (৫০) এক গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
গতকাল সোমবার ওই গৃহবধূ (২৬) বাদী হয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এর আগে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও দোকান ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা হয়। চেয়ারম্যানের একের পর এক ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, চেয়ারম্যান রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।মামলা
সূত্রে জানা গেছে, জনশুমারির নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ ওই গৃহবধূকে গত ৯ জুন বাড়িতে ডাকেন ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। গৃহবধূ ওই দিন সকালে চেয়ারম্যানে বাড়িতে যান। এ সময় চেয়ারম্যানের পরিবারসহ বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে বাড়ির একটি কক্ষে গৃহবধূকে বসতে বলেন। এর কিছুক্ষণ পর চেয়ারম্যান ঘরের দরজা বন্ধ করে গৃহবধূর মুখ চেপে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ওই গৃহবধূ চিৎকার করে দরজা খুলে বাইরে বের হন। এরপর সড়কে এসে অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি আসার চেষ্টা করেন। চেয়ারম্যান অবস্থা বেগতিক দেখে গৃহবধূর পিছু নিয়ে অটোরিকশায় ওঠেন এবং গৃহবধূকে ভয়ভীতি দেখান। ঘটনা প্রকাশ করলে জনশুমারির গণনার কাজ করতে দেবেন না। এমনকি গৃহবধূর স্বামী-সন্তানের ক্ষতি করবেন বলে চেয়ারম্যান হুমকি দেন। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ আইনের আশ্রয় নিতে চাইলে চেয়ারম্যানসহ তাঁর লোকজন নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন। এরপর ঘটনাটি মীমাংসার কথা বলে টালবাহানা করে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। পরবর্তীতে নিরুপায় হয়ে গতকাল সোমবার ওই গৃহবধূ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে উলিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
থেতরাই ইউনিয়নের বাসিন্দা নুরুন্নবী, সেকেন্দার আলী, রেজাউল ইসলামসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এক সেনা সদস্যকে মারধর করে দোকান ভাঙচুর ও চাঁদা দাবি করেন। এ অভিযোগে চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এ ছাড়া চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জমি-দখল থেকে শুরু করে নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে থেতরাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতার সঙ্গে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, ‘ওই গৃহবধূর অভিযোগ সত্য নয়। তাঁদের পারিবারিক একটি বিষয় মীমাংসা করে দিয়েছি। এই রায় তাঁদের বিপক্ষে যাওয়ায় ক্ষোভের কারণে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। এলাকার লোকজন বিষয়টি জানেন।
ঘটনার দিন ওই গৃহবধূ জরিপের কাজে তাঁর বাড়িতে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে চেয়ারম্যান বলেন, ‘সেদিন আমার পরিবারের লোকজন বাড়িতেই ছিল।’
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ধর্ষণচেষ্টার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে।