কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৩ জুন) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই হাজতিকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় তাঁকে গত বৃহস্পতিবার (১ জুন) ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
জেলা কারাগারের জেলার আবু ছায়েম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হাজতির নাম একরামুল হোসেন এরশাদ (৩৫)। তিনি ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কামাত আঙ্গারীয়া গ্রামের শওকত আলীর ছেলে। এলাকায় তিনি চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে। তাঁর নামে সাতটির বেশি মাদক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে ভূরুঙ্গামারী থানা-পুলিশ।
তবে একরামুলের পরিবারের দাবি, ওই দিন আটকের পর পুলিশ এরশাদের কাছে কিছু পায়নি। পুলিশ তাঁকে শারীরিক নির্যাতন করেছে। এতেই কারাগারে থাকা অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
একরামুলের স্ত্রী আদুরি ও বড় বোন শিউলি বেগম জানান, গত বুধবার (৩১ মে) বাড়ির পাশ থেকে এরশাদকে আটক করে ভূরুঙ্গামারী থানা-পুলিশ। এরপর প্রচণ্ড মারপিট করে। এতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরের দিন অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে আদালতে নেওয়া হলে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠান।
এরশাদের বড় বোন শিউলি বলেন, ‘পুলিশ এসে ধরে পেটাতে পেটাতে নিয়ে গেছে। আমার ভাইয়ের কাছে কোনো কিছু পায় নাই। থানায় নিয়ে গিয়ে আবার পিটিয়েছে। আমার ভাই তর্ক করেছে বলে তার জীবন নষ্ট করে দিতে চেয়েছে। আমার ভাইকে টর্চার করার কারণে সে মারা গেছে। আমরা এর বিচার চাই।’
এরশাদের স্ত্রী আদুরি বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীর সাথে অন্যায় হইছে। আমি এর বিচার চাই।’
অভিযোগের বিষয়ে ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এরশাদকে আটকের সময় সে পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি করে। পড়ে গিয়ে আঘাত পায়। এ জন্য তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।’
জেলার আবু ছায়েম বলেন, ‘ওই আসামিকে হাসপাতালের কাগজসহ কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। কাগজে ফিজিক্যাল অ্যাসল্ট লেখা ছিল। আমরা তাঁকে কারা হাসপাতালে রেখেছিলাম। শনিবার দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়লে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’
এর আগেও একরামুল কয়েকবার কারাভোগ করেছেন বলে জানান জেলার।