লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে রেহানা আক্তার (৩৪) নামে এক নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া একমাত্র বসতভিটাটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় আজ সোমবার দুপুরে হাতীবান্ধায় থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন গৃহবধূর স্বামী জিয়ারুল হক। এর আগে গত শনিবার (২ জুলাই) সকালে উপজেলার বড়খাতা গ্রামের ৪ নম্বর তহশিলদারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম আহসান হাবিব মিলন (৩৫) । তিনি উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত অন্যরা হলেন সফিয়ার রহমান পিন্টু (৫৫), মনিরুজ্জামান (৫১), রবিউল ইসলাম (২৮), খতিবর রহমান (৩০), মামুনসহ (৩৫) আরও অনেকে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জমি নিয়ে জিয়ারুলের সঙ্গে তাঁর আপন ভাই পিন্টু ও মিলনের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এই বিরোধের জেরে গত শনিবার জিয়ারুল হকের বাড়িতে যুবলীগের নেতা মিলন ও তাঁর ভাই পিন্টুসহ আরও কয়েকজন হামলা চালান। এ সময় জিয়ারুল হকের স্ত্রী রেহেনা বাধা দিলে তাঁকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেন। এ ছাড়া বসতভিটাতে আগুন ধরিয়ে দেন মিলন। এ সময় মাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে ছেলে ও মেয়েকেও মারধর করেন তাঁরা। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
সোমবার বিকেলে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছেন রেহেনা আক্তার। তাঁর মাথায় ২টি ও দুই হাতে ১১টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। এ সময় রেহেনা কান্না করতে করতে বলেন, ‘দেবর মিলন বাড়িতে এসে ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় আমি বাধা দিতে গেলে মিলনের হাতে থাকা চাকু দিয়ে আমার হাতে ও মাথায় কোপ দেয়। এমনকি আমার ভাশুর, দেবর, ননদ ও ননদের ছেলে মিলে আমাকে পেটাতে থাকে। পরে গাছের সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করে। আমাকে রক্ষা করতে আমার ছেলে-মেয়ে ছুটে এলে তাদেরও মারধর করে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বড়খাতা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব মিলন বলেন, ‘তাঁকে কোনো মারধর করা হয়নি। এটা পারিবারিক বিষয়।’
অভিযুক্ত সফিয়ার রহমান পিন্টু বলেন, ‘আমরা তাঁকে মারধর করিনি। সে নিজে নিজে হাত কেটে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।’
হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাঈম হাসান নয়ন বলেন, ওই গৃহবধূ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ ছাড়া তাঁকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।