নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ঘণ্টায় ৪০ হাজারের বেশি টাকার লেনদেনের ঘটনার তদন্তে নেমে জুয়ার অ্যাপ চালানো চক্রের সন্ধান পেয়েছে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। এই ঘটনায় জড়িত ম্যাক্সপ্লেয়ার নামের অ্যাপ্লিকেশন নির্মাতা (অ্যাপ ডেভেলপার) সুজন মিয়া, প্রধান অ্যাডমিন আবুল কালাম আজাদ ও সহকারী ভবানী রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট জানায়, মোবাইল ফাইনান্সিং সার্ভিসের অস্বাভাবিক লেনদেনের সঙ্গে সন্ত্রাসী অর্থায়নের বিষয় সংশ্লিষ্ট রয়েছে কিনা অনুসন্ধান করতে গিয়ে এই জুয়ার অ্যাপের তথ্য উদ্ঘাটন হয়।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় রংপুর মুলাটুল পুকুরপাড় অয়ন ছাত্রাবাস থেকে আবুল কালাম আজাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর গতকাল বুধবার দুপুর শোয়া ১টায় দিনাজপুরের ভূরুঙ্গামারী বীর বারইটারি গ্রাম থেকে সুজন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। সবশেষ বুধবার রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে দিনাজপুর খানসামা থেকে ভবানী রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে অনলাইন জুয়া অ্যাপ্লিকেশন চালানোর কাজে ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ, ১০টি মোবাইল সেট, ১৯টি সিম কার্ড, একটি এসডি কার্ড ও ২০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের মিডিয়া কর্মকর্তা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান আজকের পত্রিকাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার সুজন ম্যাক্সপ্লেয়ার অ্যাপের ডেভেলপার এবং সে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে এই জুয়া খেলার অ্যাপের সাবস্ক্রিপশন বিক্রি করত। আবুল কালাম আজাদ এই অ্যাপের অ্যাডমিন হিসেবে কাজ করতেন। প্রতি ঘণ্টায় এই অ্যাপ থেকে ৪০ হাজার টাকার বেশি লেনদেন করা হতো। ভবানী রায়ের ব্যবহৃত ২০-এর অধিক সিম কার্ড ব্যবহার করে অবৈধ ই-ট্রানজেকশন (নগদ/বিকাশ/রকেট) এর মাধ্যমে এই টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের নজরদারিতে ওই নম্বরগুলো মোবাইল ফাইনান্সিং সার্ভিসের অস্বাভাবিক লেনদেনের সঙ্গে সন্ত্রাসী অর্থায়নের বিষয় সংশ্লিষ্ট রয়েছে কিনা অনুসন্ধান করতে গিয়ে জুয়ার অ্যাপটির তথ্য উদ্ঘাটন হয়। এ অনলাইন জুয়ায় অংশগ্রহণ করে অনেক সাধারণ লোক সর্বশান্ত হয়েছে। এই চক্রের আরও সদস্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে এবং দেশব্যাপী অনলাইন জুয়া পরিচালনা করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।’
গ্রেপ্তার তিনজন ও তাঁদের সহযোগী পলাতক অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে অনলাইন জুয়া পরিচালনার মাধ্যমে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ব্যবহার করে অবৈধ ই-ট্রানজেকশন করার অপরাধে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী থানায় মামলা করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।