গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে চুরির অভিযোগে স্থানীয়দের গণপিটুনিতে হাফিজার রহমান (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাঙ্গামোড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত হাফিজার গাইবান্ধা সদর উপজেলার চক মামরোজপুর গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছে, মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে একটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে হাফিজার রহমানসহ তিনজন যুগীপাড়া গ্রামে যায়। এরপর তারা ওই গ্রামের রফিকুল ইসলামের বাড়ির একটি ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় ঘরের আলমারি ভেঙে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও বিভিন্ন মালামাল তাঁদের ব্যাগে ভর্তি করে। ঘটনার সময় বাড়ির মালিক রফিকুল ঢাকায় ও তার স্ত্রী চম্পা বেগম বাবার বাড়িতে ছিলেন।
এরপর তারা পাশের নুরু মিয়ার বাড়ির গোয়ালঘরে ঢুকে তিনটি গরু নিয়ে বের হয়। তারা গরু নিয়ে বাড়ির পশ্চিম পাশের ফাঁকা জমিতে যেতেই আশপাশের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে তাদের ধাওয়া করে। গ্রামবাসীর ধাওয়ায় দুজন পিকআপ নিয়ে পালিয়ে গেলেও আটক হন হাফিজার। পরে তাঁকে নুরুর বাড়িতে নিয়ে একটি ঘরে আটকে রেখে পুলিশ ও স্থানীয় চেয়ারম্যানকে খবর দেওয়া হয়। ততক্ষণে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ঘরের বেড়া ও দরজা ভেঙে টেনেহিঁচড়ে হাফিজারকে বের করে গণপিটুনি দেয়। এতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দামোদরপুর ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘দুটি বাড়িতে গরুসহ স্বর্ণালংকার ও টাকা চুরির ঘটনায় হাতেনাতে আটক ওই যুবককে পিটুনি দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় তাঁর সঙ্গে থাকা অপর দুজন পিকআপ নিয়ে দ্রুতগতিতে পথচারীদের চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় দুই থেকে তিনজন আহত হয়েছেন। ঘটনাটি থানার পুলিশকে অবগত করা হয়েছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।’
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন বলেন, ‘চুরির সময় পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ওই যুবকের মরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’
ওসি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে নিহত যুবকের নাম হাফিজার বলে জানা গেছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চুরি পেশার সঙ্গে জড়িত। নিহত হাফিজার সম্পর্কে আরও খোঁজখবর নেওয়াসহ তাঁর সঙ্গে থাকা অন্যদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। হাফিজারের মৃত্যুর ঘটনাটি তাঁর পরিবারের লোকজনকে অবগত করা হয়েছে।’
এদিকে এ ঘটনার পর বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নিহত হাফিজারের স্বজনদের হাসপাতালে থাকা মরদেহ দেখতে আসেনি।