হবিগঞ্জের সদর উপজেলার ছোট বহুলা গ্রামে চাঞ্চল্যকর ঝুমা আক্তার তিশা (৮) হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গ্রেপ্তার আসামির বোন ও নিহতের সৎ মা মোছা তাছলিমা খাতুন। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তাছলিমা জানান, তিশা হত্যাকাণ্ডে তাঁর কিশোর ভাইকে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আর এতে প্রকৃত হত্যাকারীরা রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
তাছলিমা বলেন, ‘জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী আমার ভাইয়ের বয়স ১৫ বছর হলেও মামলায় দেখানো হয়েছে ১৭ বছর ২ মাস। এ ছাড়া আমার ভাইকে প্রতিপক্ষের যোগসাজশে পুলিশের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে আদালতে জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়েছে। আমরা চাই তিশা হত্যাকাণ্ডের অপরাধীরা যেন ছাড় না পান। আর এ জন্য প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনে সুষ্ঠু তদন্ত প্রয়োজন।’
লিখিত বক্তব্যে তাছলিমা জানান, গত ১০ জানুয়ারি ছোট বহুলা গ্রামের একটি মাঠ থেকে তিশার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিশা তাছলিমার সাবেক স্বামী আব্দুস শহীদের প্রথম পক্ষের মেয়ে। তাঁরা একই গ্রামের বাসিন্দা। আব্দুস শহীদের সঙ্গে প্রায় চার বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ে হওয়ার পর তাঁরা জানতে পারেন আব্দুস শহীদের আরও এক স্ত্রী রয়েছেন। তাঁদের ঘরে ছেলে মেয়েও আছে। সংসার জীবনে তাছলিমারও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর আব্দুস শহীদের প্রথম স্ত্রী রয়েছে জানার পরও নির্যাতন ও কষ্ট সহ্য করে তিনি সংসার চালান।
তাছলিমা বলেন, ‘সম্প্রতি আমার স্বামীসহ তাঁর পরিবারের লোকজন নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেন। আমার বাবা আব্দুল করিমের ওপরও হামলা করেন আমার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এই অবস্থায় নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ১৩ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ নোটারি পাবলিক কার্যালয়ে গিয়ে অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে আমি স্বামীকে তালাক দিই। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমার স্বামী আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং মজা দেখাইবে বলে হুমকি দেয়। যার ফল শ্রুতিতে তিশাকে পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যা করে আমার ভাইকে ফাঁসিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।’
এ বিষয়ে তিশার বাবা আব্দুস শহীদ বলেন, ‘আমার মেয়েকে যারা হত্যা করেছেন পুলিশের তদন্তে তাঁদের নাম উঠে এসেছে। আমরা থানায় অজ্ঞাত মামলা করেছিলাম। আমরা কাউকে পরিকল্পনা করে ফাঁসাইনি।’