হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের মাধবপুরে কিশোর গ্যাংয়ের ক্রমাগত নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এক স্কুলছাত্রী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে গতকাল শনিবার সকালে ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
মারা যাওয়া ছাত্রীর নাম মাসুমা আক্তার (১৪)। সে উপজেলার আন্দিউড়া গ্রামের মরতুজ আলীর মেয়ে। পড়ত আন্দিউড়া উম্মেতুন্নেছা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে।
মাসুমার পারিবারিক ও সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আন্দিউড়া গ্রামের মুন পাঠানের ছেলে নয়নের নেতৃত্বে একটি কিশোর গ্যাং নিয়মিত মাসুমাকে উত্ত্যক্ত করত। গত শুক্রবার দুপুরে সে গান শিখতে যায়। সেখানে নয়নের নেতৃত্বে ইমন, বিজয়, আরমান নামের চার বখাটে বিদ্যালয়ের কক্ষে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে স্কুল থেকে ফেরার পথে রাস্তায় আবারও মাসুমার হাত ধরে টানাটানি করে এবং ভাবি বলে সম্বোধন করে। এ ঘটনার পর বাড়িতে ফিরে সন্ধ্যার পর বিষপান করে মাসুমা। স্বজনরা তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। গতকাল সকালে সে মারা যায়।
মাসুমা আক্তারের মা মাসকুরা বেগমের অভিযোগ, এক বছর ধরে নয়নের নেতৃত্বে বখাটেরা বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে মাসুমাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। তাদের অভিভাবকের কাছে বিচার দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। শুক্রবার বিকেলে গান শেখার স্কুল থেকে ফিরে মাসুমা মন খারাপ করে চুপচাপ বসে ছিল। অপমান সইতে না পেরে সন্ধ্যায় সে বিষপান করে।
বাবা মরতুজ আলী মেয়ের এ পরিণতির জন্য নয়নসহ অন্য বখাটেদের উপযুক্ত বিচার দাবি করেছেন। মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ময়নাতদন্তের পর শনিবার সন্ধ্যায় আন্দিউড়া গ্রামে মাসুমা আক্তারের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়। শনিবার রাতেই স্কুলছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে জানানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযুক্ত নয়নের মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজন গা ঢাকা দিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।