উৎসবমুখর পরিবেশে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে সিলেটের ঐতিহাসিক শাহি ঈদগাহ ময়দানে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় আয়োজিত এই জামাতে লক্ষাধিক মুসল্লির ঢল নামে। ধর্মীয় অনুভূতি, আত্মশুদ্ধি ও জাতীয় কল্যাণের আকাঙ্ক্ষায় কান্নায় ভেঙে পড়েন মুসল্লিরা।
শাহি ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন সিলেট মহানগরের বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মুশতাক আহমদ খান। এর আগে নসিহত পেশ করেন হাফিজ মাওলানা কামাল উদ্দিন। খুতবা প্রদান ও নামাজ শেষে মোনাজাত পরিচালনা করেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত বুজুর্গ শায়খুল হাদিস আল্লামা মুফতি রশীদুর রহমান ফারুক (বরুণী)।
ঈদের নামাজ শেষে লাখো মুসল্লি দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিমের কল্যাণে প্রার্থনা করেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং সংস্কারের সমান্তরালে জাতীয় ঐক্যের জন্য দোয়া করা হয়। ঈদগাহ প্রাঙ্গণে মুসল্লিরা একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি ও মুসাফাহা করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন।
ঐতিহ্যবাহী শাহি ঈদগাহ ছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। দরগাহে হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদে তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমটি সকাল সাড়ে ৭টায়, দ্বিতীয়টি সকাল সাড়ে ৮টায় এবং তৃতীয়টি সকাল সাড়ে ৯টায়। সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আনজুমানে খেদমতে কুরআন সিলেটের উদ্যোগে সকাল ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
নামাজে অংশগ্রহণকারী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার মো. রেজাউল করিম, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী এবং জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট মহানগর আমির ফখরুল ইসলাম, সিলেটের প্রশাসনিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক দলের নেতারা নামাজ আদায় করেন।
তাঁরা ঈদের জামাত শেষে দেশবাসীর শান্তি, সমৃদ্ধি ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
সকাল থেকেই ঈদগাহ ময়দানে বিপুলসংখ্যক মুসল্লির সমাগম ঘটে। কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নামাজের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন। ঈদের এই মিলনমেলায় সিলেটবাসীর প্রত্যাশা, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে, ফিরে আসবে গণতান্ত্রিক অধিকার ও সুশাসন।