প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায়। করোনার মধ্যে মায়ের ইচ্ছে হয় ছেলেকে ডাক্তার বানাবেন। তখন বুয়েটের পাশাপাশি মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার জন্যও প্রস্তুতি শুরু করেন। দৈনিক নিয়ম করে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা পড়াশোনা। অবশেষে মায়ের শখই পূরণ হলো।
২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় সারা দেশে দ্বিতীয় হয়েছেন নেত্রকোনার আসিফ রহমান ওরফে নিহাল। পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিকে পেয়েছেন ৮৯ দশমিক ৫।
নিহাল পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া গ্রামের মো. মিজানুর রহমান ও আফরোজা বেগম দম্পতির বড় ছেলে। এমন ভালো ফলাফলের পেছনে মায়ের প্রচণ্ড ইচ্ছা ও প্রেরণার পাশাপাশি নিজের পরিশ্রমের ফল পেয়ে দারুণ খুশি নিহাল ও তাঁর পরিবারের লোকজন।
মো. মিজানুর রহমান ও আফরোজা বেগম দম্পতির তিন ছেলে মেয়ের মধ্যে বড় নিহাল। হতে চান নিউরো সার্জন বিশেষজ্ঞ। মানুষের উন্নত স্বাস্থ্য সেবায় কাজ করতে চান।
আসিফ রহমান নিহাল বলেন, ‘কলেজে ভর্তির পর থেকেই বুয়েটে পড়ার খুব আগ্রহ ছিল। আর আমার মায়ের আগ্রহ ছিল আমি ভালো চিকিৎসক হই। কারণ আমার এক চাচা চিকিৎসক। তিনি মানুষকে সেবা দিয়ে থাকেন। বাবা–মা বলেন, মানবসেবার চেয়ে বড় কিছু নেই। তাই বুয়েটে প্রস্তুতির পাশাপাশি মেডিকেলে ভর্তির জন্য শুরু করি পড়াশোনা। যখন পড়তাম খুব মনযোগ দিয়ে পড়তাম। এবং বুঝে পড়ার চেষ্টা করতাম। তাই সফলতা এসেছে। আনন্দ মোহন সরকারি কলেজেও আমার রেজাল্ট বরাবর ভালো ছিল। তাই মনের মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস ছিল—ভালো কোথাও চান্স পাব।’
যারা মেডিকেলে ভর্তি হতে ইচ্ছুক তাঁদের বিষয়ে নিহাল বলেন, ‘প্রথমে কোন পথে যাব সেই গন্তব্য ঠিক করতে হবে। সেই অনুযায়ী স্টাডি করতে হবে। দৈনিক কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা পড়তে হবে। যখন পড়তে বসব তখন বুঝে পড়াই উত্তম হবে। কোচিংয়ের পাশাপাশি সিনিয়র ভাইয়ের টাচে থাকলে আশা করি সফলতা আসবেই।’
নিহালের মা আফরোজা বেগম বলেন, ‘ছেলের এমন সাফল্যে আমরা আবেগে আপ্লুত। সবাই ছেলেকে অভিনন্দন জানাতে আসছে। আসলে এই আনন্দ সুখ কতখানি তা বলে বোঝাতে পারব না। ছেলে আমার কথা রেখেছে, আমি মন থেকে দোয়া করি সে ভালো ডাক্তার হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াবে। ছেলে মেয়েদের পড়াশোনায় মায়েদের ভূমিকা থাকতে হয়। সে কাজটি মনে হয় ভালো ভাবে পালন করতে পেরেছি বিধায় সফলতা এসেছে।’
নিহালের বাবা মিজানুর রহমান সুনামগঞ্জে তাহিরপুর উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। আর আফরোজা বেগম ময়মনসিংহের ফুলপুর মহিলা কামিল মাদ্রাসায় জীববিজ্ঞানের প্রভাষক। ময়মনসিংহ শহরের কৃষ্টপুর দৌলত মুন্সি সড়ক এলাকায় তাঁরা নিজেদের বাড়িতে থাকেন।
আরও খবর পড়ুন: