জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) নতুন পাঠ্যপুস্তক নিয়ে বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না। এবার কিশোরগঞ্জ জেলার কয়েকটি স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা বইয়ের ভেতরে পাওয়া গেল হিন্দুধর্মবিষয়ক বেশ কিছু পাতা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব পাতার ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। ‘মুদ্রণ বিভ্রাটের’ কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছে এনসিটিবি।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়, সরযূ বালা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও হাসমত উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়সহ জেলার সব স্কুলের শিক্ষার্থীরা নতুন বই পায় জানুয়ারির শুরুতে। ইসলাম শিক্ষা বইয়ের পাতা ওলটানোর সময় ১২ পৃষ্ঠা থেকে ২৭ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পাতায় দেবদেবীর ছবি এবং তাদের বিবরণ দেখতে পেয়ে অভিভাবক ও স্কুলের শিক্ষকদের বিষয়টি জানায় তারা। এরপর শিক্ষার্থীদের বই বদলে দিয়েছেন শিক্ষকেরা।
অভিভাবকেরা বলছেন, এমন ভুল কোমলমতি শিশুদের মানসিক বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। কীভাবে ইসলাম শিক্ষা বইয়ে দেবদেবীর ছবি ও বিবরণ এল, তা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এ বিষয়ে দ্রুত সংশোধনী দেওয়ারও আহ্বান জানান তাঁরা।
কিশোরগঞ্জের ১৩টি উপজেলায় ৩০০টি সরকারি ও বেসরকারি হাইস্কুল রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ লাখের বেশি।
আজিম উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোকাররম হোসেন শোকরানা বলেন, নিখুঁত বই পৌঁছানোর জন্য নিরলসভাবে সবাইকে কাজ করতে হবে।
এ রকম অন্তত ১২টি বই অভিভাবকেরা ফেরত দিয়েছেন জানিয়ে সরযূ বালা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মাখন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, তাঁদেরকে বইগুলো বদলে দেওয়া হয়েছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুন নাহার মাকছুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খুব বেশি স্কুলে এমন ভুলভ্রান্তি ধরা পড়েনি। যে বইগুলোতে ছবি এসেছে, তা আমরা পরিবর্তন করে দিয়েছি। কী কারণে ইসলাম শিক্ষা বইয়ে দেবদেবীর ছবি এসেছে, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।’
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যানের সাথে এ বিষয় নিয়ে আমার কথা হয়েছে। ভুলক্রমে হিন্দুধর্মের কিছু বিষয় বইয়ে চলে এসেছে। এনসিটিবির চেয়ারম্যান বইগুলো ফেরত নিয়ে বদলিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। এনসিটিবির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এনসিটিবি।’