দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের ইংরেজি বিষয়ে দৈন্য কেন? উত্তর খুবই সহজ। এ দেশে ইংরেজি ভাষা পড়ানো হয় অন্য বিষয়গুলোর মতোই গতানুগতিকভাবে। তবে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা দক্ষতার মাপকাঠি হলো Listening, Speaking, Reading & Writing। বিপরীতে শিক্ষকেরা শেখান Grammar, Vocabulary, Synonym/Antonym, Memorized Semi Writing Partসহ বিভিন্ন সাবস্কিল।
অনেক সময় শিক্ষিত অভিভাবকদের বলতে শুনেছি, গ্রামার শিখলেই ইংরেজি পারবে। আদতে ইংরেজি শেখার জন্য প্রয়োজন Communicative English। এ কারণেই ভারত, শ্রীলঙ্কার মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর শিক্ষার্থীরা Communicative Englishসহ ইংরেজি ভাষায় অনেক অগ্রগামী।
নব্বইয়ের দশকে ইংরেজি বিষয়ে শুধু রিডিং ও রাইটিং পড়ানো হতো। এ কারণে আমাদের জাতীয় পাঠ্যক্রমে লিসেনিং ও স্পিকিং দক্ষতা উপেক্ষিত। পাশাপাশি ইংরেজি শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়েই ওই দুটি দক্ষতার ক্ষেত্রে অদক্ষ। ভাবলেই অবাক হতে হয়, দীর্ঘ ১২ বছর রিডিং ও রাইটিং শিখেও আইইএলটিএস, টোয়েফল, পিটিই, ডুয়োলিঙ্গোর মতো ইংরেজি দক্ষতা যাচাইয়ের পরীক্ষায় বেশির ভাগ প্রার্থী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেন। সেদিক বিবেচনায় লিসেনিং ও স্পিকিং অংশে অদক্ষ থাকাই শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। বিপরীতে অনেকে বেসরকারিভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কোর্স করে, কিংবা ব্যক্তিগত চেষ্টায় অনলাইন রিসোর্সের সাহায্যে নিজেকে উন্নত করেছেন, তাঁদের কথা ভিন্ন।
করণীয়
শিক্ষাবিষয়ক নীতিনির্ধারকদের কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ইংরেজি শিক্ষকদের নিজস্ব দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি পাঠদানে নতুনত্ব আনতে হবে। একই সঙ্গে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের শুধু একাডেমিক ফলাফল ভালো করার অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। গত এক যুগেবহু জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর কাঙ্ক্ষিত পাবলিক ও শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য অযোগ্য বিবেচিত হতে দেখেছি। অথচ জিপিএ-৩.৫ থেকে ৪.৫ অর্জন করেও প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের তালিকায় অনেকের নাম খুঁজে পাওয়া যায়।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি পাবলিক কলেজ, ঢাকা।