২৭৫ দশমিক ৮৩ একরের ক্যাম্পাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশাল এই ক্যাম্পাস প্রতিদিন মুখর থাকে শত শত শিক্ষার্থীর পদচারণে। কিন্তু বড় ছুটিতে; বিশেষ করে ঈদের সময়, যখন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আপনজনের কাছে ফিরে যান, তখন এই ব্যস্ত ক্যাম্পাস হয়ে যায় ফাঁকা। সেই সঙ্গে একা হয়ে পড়ে ক্যাম্পাসের অসংখ্য কুকুর ও বিড়াল। খাবারের খোঁজে তারা ছুটে বেড়ায় এদিক-সেদিক। এবারের ঈদের ছুটিতে সেই অবলা প্রাণীদের পাশে ছিলেন মিশকাত তানিশা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের ছাত্রী মিশকাত। তিনি ‘অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার টিম অব ঢাকা ইউনিভার্সিটি’র একজন সদস্য। এই সংগঠন সারা বছর প্রাণীদের খাবার ও চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকে। তবে ঈদের ছুটিতে যখন অধিকাংশ স্বেচ্ছাসেবক বাড়ি চলে যান, তখন একাই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন মিশকাত।
ঈদের দিন, যখন চারপাশ আনন্দ আর উৎসবে ভরে ওঠে—নতুন জামা, সুস্বাদু খাবার আর পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর আনন্দে মেতে ওঠে সবাই, তখন মিশকাত হাতে খাবার নিয়ে বের হন ক্যাম্পাসে। রান্নার ব্যবস্থা না থাকায় তিনি বাজার থেকে বিস্কুট কিনে আনেন। বিকেল থেকে রাত অবধি ক্যাম্পাসে ঘুরে ঘুরে কুকুর-বিড়ালদের মুখে খাবার তুলে দেন। ওদের খুশিতে ঝলমলে চোখ আর লেজ নাড়ানোই ছিল মিশকাতের ঈদের সবচেয়ে বড় আনন্দ।
মিশকাত তানিশা বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে আমার পরিবারের সদস্যরা বাড়ি গেলেও আমি যাইনি। শহীদুল্লাহ হলের দুটি অসুস্থ বিড়ালকে বাসায় এনে সেবা দিয়ে সুস্থ করেছি। এরপর প্রতিদিন আমি একাই কুকুরদের খাবার দিয়েছি।’
শুধু খাবার নয়, কোনো প্রাণী আহত বা অসুস্থ হলে মিশকাত তাদের সেবা করেন। প্রাণীদের প্রতি এই ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ আর মমতা তাঁকে আলাদা করে তোলে।