মাত্র ছয় মাসে কোরআন হিফজ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জালাল উদ্দিন। এত অল্প সময়ে তাঁর ৩০ পারা কোরআন মুখস্থের খবরে বেশ সাড়া পড়েছে। তাঁর বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম সিদ্দীকী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় জালাল হাফেজি মাদ্রাসায় ভর্তি হন। ভর্তির ছয় মাসে হাফেজ হন ২১ বছরের যুবক জালাল। বর্তমানে তিনি হাফেজ নুমান হাবিবের তত্ত্বাবধানে দৌলতপুর রহমানিয়া দারুসসুন্নাহ হাফেজিয়া মাদ্রাসায় হিফজ শোনাচ্ছেন।
জালাল জানান, ছোটবেলা থেকেই বাবা চাইতেন যেন ছেলে হাফেজ হয়। হজে গিয়েও মা-বাবা আল্লাহর কাছে দোয়া করেন তাঁদের ছেলে যেন হাফেজ হয়। লকডাউনের সময় কাজে লাগিয়ে জালালের মা জালালকে হিফজ সম্পন্ন করার তাগিদ দেন। বিভিন্ন সময়ে ক্লাসে শিক্ষকেরাও হিফজ করার ফজিলত তুলে ধরেন। আর নিজের কাছেও মনে হলো লকডাউনটাও কাজে লাগুক। মা, বাবা, ওস্তাদদের অনুপ্রেরণায় জালাল লকডাউনে হিফজ শুরু করেন। ছয় মাসেই পুরো কোরআন মুখস্থ করে হাফেজ হন জালাল। তাঁর এই সাফল্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে দোয়া চান জালাল।
জালালের এ সাফল্যে ওস্তাদ হাফেজ নুমান হাবিব বলেন, 'কোরআন মুখস্থ শেষে বর্তমানে জালাল আমার তত্ত্বাবধানে হিফজ শোনাচ্ছে। আমি ওস্তাদ হিসেবে খুশি। জালালকে যেন মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন সেই কামনা করি।'
জালালের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা মহামারির শুরুতে আমি ছাত্রদের পড়াশোনার প্রতি, যারা কোরআন পড়তে জানে না তাদের কোরআন তিলাওয়াত শেখার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের একটি করে পাঠ্যগ্রন্থ রচনার আহ্বান জানাই। আমার আহ্বানে আর কেউ সাড়া দিয়েছে কি না, জানি না। কিন্তু আমার স্নেহাস্পদ ছাত্র জালাল উদ্দিন আল-কোরআনের হাফেজ হয়েছে।' এতে বেশ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এই অধ্যাপক।
প্রসঙ্গত, জালাল কুমিল্লার মুরাদনগরের দৌলতপুর রহমানিয়া দারুসসুন্নাহ আলিম মাদ্রাসা থেকে দাখিল সম্পন্ন করেছেন। আলিম করেছেন ঢাকার ডেমরা দারুন্নাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে। পরে উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে।