শখ জীবনেরই অংশ। একেকজনের একেক ধরনের শখ থাকে। রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষার্থী মো. শামসুজ্জামান সালাহউদ্দিনের শখ হলো ডাকটিকিট ও বিদেশি মুদ্রা সংগ্রহ। তাকে নিয়ে লিখেছেন সিফাত রাব্বানী।
সালাহউদ্দিন তখন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। এক বন্ধুর মাধ্যমে ডাকটিকিট আর খাম সংগ্রহ সম্পর্কে জানতে পারে সে। এর পর থেকে ডাকটিকিট সংগ্রহ শুরু করে সালাহউদ্দিন। প্রথম ডাকটিকিট সংগ্রহ করে রাজশাহী সেন্ট্রাল ডাকঘর থেকে। তখন সে এতই ছোট ছিল যে কাউন্টারের মাস্টারকে পর্যন্ত দেখতে পেত না। পা উঁচু করে, মাথা আরও কিছুটা লম্বা করে বলত, ‘আংকেল, আমাকে ১ টাকার ২টি, ২ টাকার ১টি, ৩ টাকার ১টি ডাকটিকিট দেন।’ তখনই তার ৭ টাকার প্রথম ডাকটিকিট কেনা। এভাবেই খুচরা টাকা জমিয়ে ডাকটিকিট সংগ্রহ শুরু করে সালাহউদ্দিন। বর্তমানে বিভিন্ন দেশের হাজারখানেক ডাকটিকিট রয়েছে তার। সালাহউদ্দিনের মা এ কাজে সাহায্য করেন তাকে।
শুধু কি ডাকটিকিটের সংগ্রহ? সালাহউদ্দিনের কাছে আছে ১০০টির বেশি দেশের ব্যাংক নোট! সেসব দেশের মধ্যে অনেক দেশের নাম এখন পৃথিবীর মানচিত্র থেকেই মুছে গেছে। সালাহউদ্দিন জানায়, ‘বিলুপ্তপ্রায় দেশ, বিভিন্ন টেরিটরি, আইল্যান্ড বা যোগাযোগ দুরূহ জায়গাগুলোর মুদ্রা ও ডাকটিকিট সংগ্রহ করা বেশ কঠিন।’ অনেক দেশে সালাহউদ্দিনের বন্ধু ও সহসংগ্রাহক আছে, যারা তাকে তার পছন্দের জিনিস উপহার পাঠায়। সেও তাদের ডাকটিকিট বা মুদ্রা পাঠিয়ে দেয়।
ডাকটিকিট নিয়ে বেশ কিছু প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে সালাহউদ্দিন। গত ফিলেক্স ও বিডিপেক্সে প্রথমবারের অংশগ্রহণে ২টি সিলভার অ্যাওয়ার্ড পায় সে। এ ছাড়া তার অর্জনের ঝুলিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০টি সনদ এবং ৩০টির বেশি সম্মাননা স্মারক আছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণায় অনেকবার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সম্মাননা পেয়েছে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও কলেজের এই শিক্ষার্থী।
এ বছর রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেছে সালাহউদ্দিন। এ প্রতিষ্ঠান থেকে বিজ্ঞান বিভাগে বিভাগীয় শ্রেষ্ঠ মেধাবীর স্বীকৃতি পেয়েছে সে। সম্মাননা নিয়েছে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছ থেকে।