কুমুদিনী সরকারি কলেজ শাখা
ঈদ মানেই খুশি, আনন্দ আর উৎসব। কিন্তু সমাজের কিছু মানুষ এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত থাকে। ছোট্ট শিশু রায়হান, যার বাবা অসুস্থ থাকায় নতুন জামা কেনা হয়নি। ১৩ বছরের ইসমাইল, বাবা-মা থেকেও নেই তার; একটি মনিহারি দোকানে কাজ করে, যেখানে ঈদের নতুন জামা যেন বিলাসিতা। ষাটোর্ধ্ব সালাম মিয়া পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে একাকী, মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাঁর ছেলেমেয়েরা নিজ নিজ সংসার নিয়ে ব্যস্ত, বৃদ্ধ পিতাকে দেখার সময়টুকু পর্যন্ত নেই। নৈশপ্রহরী রহমত হোসেন, স্বল্প আয়ে নিজের পরিবার নিয়ে ভালোভাবে ঈদ করতে পারেন না।
পাঠকবন্ধু কুমুদিনী সরকারি কলেজ শাখা এই দুঃখী মানুষগুলোর মুখে হাসি ফোটাতে এক মানবিক উদ্যোগ নিয়েছে। শাখার প্রধান উপদেষ্টা, কুমুদিনী সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আকতার হোসেন এবং শাখার সদস্যদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সাতটি পরিবারের হাতে ঈদ উপহার তুলে দেওয়া হয়।
উপদেষ্টা আকতার হোসেন বলেন, সমাজ উন্নয়নে পাঠকবন্ধুর পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীরা যে উদ্যোগ নিয়েছে, নিঃসন্দেহে তা প্রশংসা করার মতো। এভাবেই বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে তারা বাংলাদেশকে একটি মানবিক দেশে পরিণত করবে, এটিই আমাদের চাওয়া। এ ছাড়া কুমুদিনী সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম এই মহতী উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
টাঙ্গাইল সদরের পশ্চিম আকুরটাকুর পাড়া এলাকার রোজিনা বেগম, সালাম মিয়া; ভ্যানচালক শামসু, যুথী, রহমত হোসেন, আকলিমা; পরিচ্ছন্নতাকর্মী সবুজ ও ইসমাইলের হাতে তুলে দেওয়া হয় ঈদ উপহার।
উপহার পেয়ে রোজিনা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। অনেক কষ্ট করে সংসার চালাতে হচ্ছে। সামর্থ্য না থাকায় বাচ্চাদের নতুন জামা কিনে দিতে পারছিলাম না। পাঠকবন্ধুর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই।’ ঈদের উপহার পেয়ে ইসমাইলের মুখে ফুটে ছিল যেন বাঁধ ভাঙা হাসি। পরিচ্ছন্নতাকর্মী সবুজ বলেন, ‘পাঠকবন্ধু আমাদের ঈদ উপহার দিয়েছে। এই উপহারটুকু মায়ের হাতে তুলে দেব। ঈদ এবার আমাদের ভালো কাটবে।’
আকলিমা বলেন, ‘মানুষের বাসায় কাজ করে যা পাই, তা দিয়ে সংসার চালানোই কঠিন। ঈদে কিছু সঞ্চয় হয় না। এবার ঈদ উপহার পেয়ে বাচ্চাদের জন্য একটু সেমাই, পোলাও দিতে পারব ভেবে খুব ভালো লাগছে।’
উপহার দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন পাঠকবন্ধু কুমুদিনী সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি নাঈমা ইসলাম ইকরা, সহসভাপতি নুসরাত জাহান আয়েশা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল হক, সদস্য তাবাসসুম রাইসা লী, আহ্বায়ক রাদিয়া শানজান ইশমা প্রমুখ।