মাসুদুর রহমান মাসুদ, ঝিকরগাছা (যশোর)
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থী মো. নাহিদুজ্জামান। তিনি গ্লোবাল স্কলারশিপের আওতায় স্নাতকোত্তর পড়ছেন ফ্লিন্ডারস বিশ্ববিদ্যালয়ে। অস্ট্রেলিয়ার এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নাহিদের পড়া ও গবেষণার বিষয় জীবপ্রযুক্তি।
নাহিদের গ্রামের বাড়ি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বল্লা গ্রামে। তিন ভাইবোনের মধ্যে বড় তিনি। বাবা বাবুল আক্তার পেশায় কৃষক। মা মর্জিনা বেগম গৃহিণী। মা-বাবার কাছে গ্রাম্য পরিবেশে বেড়ে ওঠেন নাহিদ। গ্রামের বল্লা বিএনকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ২০১০ সালে জিপিএ-৫ ও ২০১২ সালে যশোরের হামিদপুর আলহেরা কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসিতে জিপিএ-৪.৭০ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে বিএসসি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজিতে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক (অনার্স) পাস করেন। ২০২০ সালে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসইন বায়োটেকনোলজিতে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
মা-বাবার ইচ্ছা ছিল, পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে লেখাপড়া করে তাঁদের মুখ উজ্জ্বল করবেন নাহিদ। সেটা করতেও চলেছেন তিনি।
বাবার স্বপ্নের কথা শোনার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শেষে উচ্চশিক্ষা অর্জনে বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি নাহিদের মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। সে লক্ষ্যে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন বাকৃবির জীবপ্রযুক্তি বিভাগে। সে সময় বিভাগীয় প্রধান তাঁকে উৎসাহ জুগিয়েছেন। প্রথমবার আইইএলটিএসে ভর্তি হলেও আর্থিক অসংগতির কারণে তা শেষ করা সম্ভব হয়নি। ২০২২ সালে নাহিদ আইইএলটিএসে ভর্তি হয়ে ভালো স্কোর করেন। গ্লোবাল স্কলারশিপ নিয়ে ২৮ হাজার ডলার মূল্যমানের বৃত্তি পেয়ে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডের ফ্লিন্ডারস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে গত বছরের অক্টোবরে সেখানে পাড়ি জমান নাহিদ।
বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে পড়ালেখার পাশাপাশি রক্তদাতা সংগঠন বাঁধনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন নাহিদ। তিনি ভবিষ্যতে কৃষক ও কৃষি বিষয়ে পড়তে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করতে চান। যাঁরা উচ্চশিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় যেতে চান, তাঁদের জন্য নাহিদ জানিয়েছেন, পড়াশোনার পাশাপাশি ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। বিশেষ করে ইংরেজি বলতে পারা, শুনে বুঝতে পারা, লিখতে পারা এবং বড় বড় বাক্য খুব দ্রুত পড়ে বুঝতে পারা খুব জরুরি। নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করতে হবে, তাতে বোঝার দক্ষতা বাড়বে।
ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে, তাতে মানসিক জড়তা দূর হবে। এ ছাড়া ইংরেজিতে মোটিভেশনাল লেকচার, বিদেশিদের কনভারসেশন শুনতে হবে, যা শুনে বুঝতে পারার দক্ষতা বাড়বে। লক্ষ্য স্থির করে লেগে থাকতে হবে সাফল্যের জন্য।