৬০০ প্রজাতির প্রায় ১ হাজারটি বড়, ১ হাজার ২৭৮টি মাঝারি এবং ৪ হাজার ৪৬৭টি ছোট আকারের গাছ আছে এখানে। বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা সহজে খুঁজে পাওয়ার জন্য পুরো বাগানকে ৩০টি অংশে ভাগ করা হয়েছে। ঔষধি, ফুল, ফল, ক্যাকটাস, অর্কিড, পাম, সাইকাস, মসলা, টিম্বার্স, বাঁশ, বেত, বিরল প্রজাতির কিংবা বনজ—সব ধরনের উদ্ভিদ আছে সেই বাগানে। আছে জলজ উদ্ভিদ বা হাইড্রোফাইটিক সংরক্ষণের জন্য ওয়াটার গার্ডেন। মরুভূমি ও পাথুরে অঞ্চলের উদ্ভিদ সংরক্ষণের জন্য আছে রক গার্ডেন।
বাগানের পূর্ব দিকের সীমানা ঘেঁষে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগৃহীত বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় ৬০টির বেশি প্রজাতির ক্যাকটাস দিয়ে সাজানো আছে একটি ক্যাকটাস হাউস। কমব্রিটাম, রনডেলেসিয়া, ক্যামেলিয়া, আফ্রিকান টিউলিপ, ট্যাবেবুঁইয়া, রাই বেলি, জেসিয়া, ডায়ান্থাস, সিলভিয়া, হৈমন্তিসহ বিভিন্ন ধরনের ফুলগাছ এবং স্টার অ্যাপেল, আমেরিকান পেয়ারা, থাই মাল্টা, আঙুর, প্যাসান ফলসহ বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি ফলের গাছ সংরক্ষিত আছে এখানে। সংরক্ষিত আছে বাঁশবাগানে ১৬ প্রজাতির বাঁশ, মসলা জোনে রয়েছে শতাধিক মসলাজাতীয় উদ্ভিদ।
এত গাছপালায় সাজানো এ বাগান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গেলেই দেখা যাবে। ১ হাজার ২০০ একর আয়তনের ক্যাম্পাসের প্রায় ২৫ একর জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বোটানিক্যাল গার্ডেন। আন্তর্জাতিক সংস্থা বোটানিক গার্ডেনস কনজারভেশন ইন্টারন্যাশনালের (বিজিসিআই) স্বীকৃতি পাওয়া বাংলাদেশের প্রথম বোটানিক্যাল গার্ডেন এটি। অনিন্দ্যসুন্দর এই সংগ্রহশালা মুগ্ধ করবে যেকোনো বৃক্ষপ্রেমীকে।
রয়েছে আপাং, পেটারি, বাসক, উচান্টি, ঈশ্বর মূল, রইনা, দাঁদমর্দন, হুরহুরিয়া, মূতা, কালাহুজা, অতশি, স্বর্ণলতা, চাপড়া, হরিণা, আসাম লতা, জির, উলটচন্ডাল, তোকমা, জ্যাট্রোফা, লাল রিয়া, মহুয়া, নাগ কেশর, জয়ত্রী, কালিজিরা, রক্তচিতা, সর্পগন্ধা, দুধকরচ, ইন্দ্রযব নামের অর্ধশতাধিক প্রজাতির ঔষধি উদ্ভিদ।
উদ্যানটি বাংলাদেশের সমৃদ্ধ উদ্যানগুলোর মধ্যে অন্যতম। ফলে উদ্ভিদ সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার এটি নির্বিকল্প জায়গা। উদ্যানের পাশেই বয়ে চলেছে ব্রহ্মপুত্র নদ। বাগানে বসে ব্রহ্মপুত্রের বুক ছুঁয়ে আসা হাওয়া উপভোগকালে কানে শুধু একটি কথাই বাজে—ছায়া- সুনিবিড় শান্তির নীড়।