মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ
ইউনেসকোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া রিকশাচিত্রকে মূল প্রতিপাদ্য করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন করা হবে। এরই মধ্যে উৎসব উদ্যাপনের প্রস্তুতি উপলক্ষে রিকশাচিত্র অঙ্কন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় ফটকের পাশের দেয়াল চিত্রিত করা হয়েছে রিকশাচিত্রের আদলে। এসব চিত্রে ফুটে উঠেছে বুড়িগঙ্গার নৌকা, মা, বিভিন্ন ধরনের ফুল, মাছ, নৌকা, বাঘ, ময়ূর। এই দেয়ালচিত্র ছাড়াও বৈশাখ উপলক্ষে আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রায় থাকবে বিশাল আকৃতির রিকশা পেইন্টিং।
‘বৈশাখে নূতন করিনু সৃজন/ মঙ্গলময় যত তনু-মন’ স্লোগানে পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। পুতুল, পাখি, বাঘ, প্যাঁচা, মুখোশসহ বিভিন্ন রকমের মাটির জিনিসপত্র তৈরি করেছেন শিক্ষার্থীরা। সেগুলোয় এখন রং করার কাজ চলছে।
বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন আয়োজনের দায়িত্বে থাকা চারুকলা অনুষদের পঞ্চম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাঈম মৃধা বলেন, ‘দেয়ালচিত্র, মুখোশ, স্ট্রাকচার— সবকিছুতেই রিকশাচিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে। দেয়ালচিত্রের ক্ষেত্রে রিকশা পেইন্টিংয়ের বিভিন্ন মোটিফ ও উজ্জ্বল রং ব্যবহার করা হয়েছে। রিকশাচিত্রে সাধারণত নায়ক-নায়িকা, কুমির, বাঘ, মাছ, ময়ূর, ফুল, লতাপাতা এবং বিভিন্ন পশুপাখির ছবি দেখতে পাওয়া যায়। সেগুলোর মধ্য থেকে দৃষ্টিনন্দন চিত্রগুলোই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।’
দেয়ালচিত্র অঙ্কন করা শিক্ষার্থীদের অন্যতম পরমা দাস বলেন, ‘রিকশাচিত্র সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’
পায়েল দাস অনিক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে বড় একটি কুমিরের স্ট্রাকচার তৈরি করা হচ্ছে। কুমিরটি হবে দৈর্ঘ্যে ১৬ ফুট ও প্রস্থে ৯ ফুট। এ ছাড়া সাধারণ রিকশার দ্বিগুণ মাপের একটি রিকশার কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। এর উচ্চতা ৯ ফুট ও প্রস্থ ৬ ফুট।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আলপ্তগীন বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে ইউনেসকোর অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে রিকশাচিত্র স্বীকৃতি পেয়েছে। এ জন্যই বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ উপলক্ষে আমরা রিকশাচিত্রের যত রকমের অঙ্কন, মোটিফ এবং চিত্রায়ণের যত অলংকরণ রয়েছে, সেগুলো নিয়েই রিকশাকে কেন্দ্র করে দেয়াল পেইন্টিং করেছি।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউট বিভিন্ন ব্যানারে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।