সাক্ষাৎকার

বিদেশে এসে বুঝেছি, বৈষম্য দূর করার জন্য আলোচনা ও সচেতনতা জরুরি

শাবিপ্রবি থেকে টেক্সাস টেক ইউনিভার্সিটি। যাত্রাটা বেশ বর্ণিল মেহেদী হাসানের। ছাত্রজীবনে আয়োজন করেছিলেন দেশে প্রথম ক্যাম্পাস জার্নালিস্ট ফেস্ট। এখন টিটিইউতে পিএইচডি গবেষক হিসেবে কাজ করছেন। বিদেশে উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মো. আশিকুর রহমান

শাবিপ্রবিতে পড়াশোনার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

মেহেদী হাসান: শাবিপ্রবিতে আমার পড়াশোনার সময়টা ছিল জীবনের অন্যতম সোনালি অধ্যায়। পুরোপুরি উপভোগ করেছি এই সময়টা। পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রমে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন একাধিক জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছি। এর মাধ্যমে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করি। এ ছাড়া স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বপ্নোত্থানের সাধারণ সম্পাদক, জামালপুর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং ফরাসি ভাষা ক্লাবসহ অন্যান্য সংগঠনে সক্রিয় ছিলাম।

পড়াশোনার বাইরে বিভিন্ন ইভেন্ট, যেমন বইমেলা, ক্যাম্পাস জার্নালিজম ফেস্ট, বিজনেস ফেস্ট, রিইউনিয়ন আয়োজনেও ভূমিকা রেখেছি। শাবিপ্রবি থেকে মার্কেটিংয়ে বিবিএ এবং এমবিএ করার পাশাপাশি ফরাসি ভাষায় সার্টিফিকেট ও ডিপ্লোমা শেষ করেছি। সংক্ষেপে বিশ্ববিদ্যালয়জীবন ছিল ব্যস্ততায় পরিপূর্ণ এবং আনন্দময়।

টেক্সাস টেক ইউনিভার্সিটিতে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়া কেমন ছিল?

মেহেদী: উত্তর আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে প্রয়োজন হয় সিভি, টেস্ট স্কোর (জিআরই/জিম্যাট), স্টেটমেন্ট অব পারপাস, একাডেমিক সার্টিফিকেট ও মার্কশিট, ভাষা দক্ষতার স্কোর অর্থাৎ টোয়েফল বা আইইএলটিএস এবং রেফারেন্স লেটার। আমার ক্ষেত্রে জিআরই/জিম্যাটের প্রয়োজন পড়েনি। তবে আমি আইইএলটিএস দিয়েছিলাম। চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করে তিনটিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলাম। বৃত্তিসহ টেক্সাস টেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় এখানে আসি। মাস্টার্স সম্পন্ন করে বর্তমানে এখানেই পিএইচডি করছি।

সেখানে প্রথম কিছুদিন কেমন কেটেছিল?

মেহেদী: ২০২১ সালের আগস্টে টেক্সাস টেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি। প্রথম সেমিস্টারটি বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। নতুন দেশের পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া, শিক্ষাব্যবস্থার ভিন্নতা এবং নতুন বিষয়ে পড়াশোনা—সবই চ্যালেঞ্জের অংশ ছিল। প্রথম দিকে ক্যাম্পাসের প্রায় ২ হাজার একরের বিশাল এলাকায় ঘুরে ঘুরে জায়গাগুলো চিনে নেওয়ার চেষ্টা করতাম। নতুন বন্ধু ও শিক্ষকদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া, নতুন পরিবেশে খাপ খাওয়ানোও ছিল একটি বড় কাজ।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে আপনি কী পার্থক্য লক্ষ করছেন?

মেহেদী: বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থা আলোচনা ও সমালোচনামূলক চিন্তাধারার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা পরীক্ষায় পাসের দিকে বেশি মনোযোগী। এখানে শেখানোর প্রক্রিয়াকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়, পরীক্ষা মুখ্য নয়। যুক্তরাষ্ট্রে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের মতামত ও সমালোচনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ধরনের শিক্ষাব্যবস্থায় মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় লেগেছিল।

টেক্সাস টেক ইউনিভার্সিটি। ছবি: সংগৃহীত

নতুন দেশে এসে কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন?

মেহেদী: নতুন পরিবেশ, শিক্ষাব্যবস্থা এবং পারিবারিক দূরত্ব—সব মিলিয়ে প্রথম দিকে কিছুটা অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছি। তবে শিক্ষকদের আন্তরিক সহযোগিতা এবং টেক্সাস টেকের বাংলাদেশি কমিউনিটির সহায়তায় এগুলো কাটিয়ে উঠেছি। আমার শিক্ষক একবার বলেছিলেন, ‘তুমি কিছু পারো না বলেই এখানে এসেছ। আমরা আছি তোমাকে সাহায্য করার জন্য।’ কথাটি আমাকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল।

আপনার গবেষণার ফোকাস কী ছিল?

মেহেদী: টেক্সাস টেক বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স থিসিসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় সাংবাদিকদের ভূমিকা ও সংবাদমাধ্যমের প্রোপাগান্ডা কৌশল নিয়ে কাজ করেছি। এই গবেষণার জন্য ২০২৪ সালে সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম পুরস্কার পেয়েছি। বর্তমানে পিএইচডি গবেষণায় বড় বড় বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যোগাযোগ এবং সাইবার ইনফ্রাস্ট্রাকচার নিয়ে কাজ করছি।

গবেষণায় সাফল্যের জন্য কী কী দক্ষতা থাকা জরুরি?

মেহেদী: গবেষণায় সাফল্যের জন্য ধৈর্য, সততা এবং নিয়মিত পড়ার অভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণার ক্ষেত্রে নিজের কাজের প্রতি আন্তরিকতা ও অন্যের কাজের প্রতি সম্মান থাকা জরুরি। পাশাপাশি সমালোচনামূলক চিন্তা ও সৃজনশীলতাও জরুরি।

আপনার জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা কী?

মেহেদী: জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো বৈষম্যের বিষয়টি উপলব্ধি করা। আমাদের সমাজে বিভিন্ন ধরনের বর্ণবাদ ও বৈষম্য রয়েছে, যা আমরা অনেক সময় বুঝতে পারি না। দেশের বাইরে এসে বুঝেছি যে বৈষম্য দূর করার জন্য আলোচনা ও সচেতনতা জরুরি।

আইইউবিএটির ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপিত

সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া পার্লিসের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

স্টেট ইউনিভার্সিটি আয়োজন করতে যাচ্ছে ‘মিডিয়া ট্যালেন্ট হান্ট’ প্রতিযোগিতা

দেশে বসেই ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল ল্যাঙ্কাশায়ারের স্নাতক প্রোগ্রামে যুক্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

সাত কলেজের ‘স্বতন্ত্র পরিচয়’ প্রতিষ্ঠায় বিশেষজ্ঞ কমিটির তৎপরতা শুরু

তিন পদক্ষেপ বাস্তবায়নের পর ডাকসু নির্বাচন: উপাচার্য

আইইউবিএটির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি ঘোষণা

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ২১৯ শিক্ষার্থী পেলেন মেধাবৃত্তি

মেরিটাইম ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ, পরশু ইউজিসি অভিমুখে লং মার্চ

নতুন বছরে নতুন চ্যালেঞ্জ, নতুন উদ্দীপনায় একসঙ্গে এগিয়ে চলা

সেকশন