বলা হয়, বন্যরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’। কিন্তু কিছু সুযোগসন্ধানী মানুষ টাকার লোভে বন্য প্রাণী ধরে নিয়ে আসে লোকালয়ে। আবার কিছু মানুষ এদের ফিরিয়ে দেয় নিজ আবাসস্থলে। তেমনই একজন বায়েজিদ মুন্সী। তাঁর কাছে পথের ধারে পড়ে থাকা অসুস্থ কুকুর সেবা পায়। বন্য পাখি, প্যাঁচা, সাপ, বনবিড়াল, মেছো বিড়াল ও শিয়ালের মতো প্রাণীগুলো ফিরে পায় তাদের নিজ আবাসস্থল। এভাবে স্থানীয় মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া বায়েজিদ বন্য প্রাণীর পাশে দাঁড়িয়ে নজর কাড়ছেন সবার।
২০২০ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত শতাধিক সাপ, বিভিন্ন জাতের বন্য পাখি, প্যাঁচা, বনবিড়াল, মেছো বিড়াল ও শিয়াল উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করেছেন বায়েজিদ। উপকূল অঞ্চল পটুয়াখালীর কলাপাড়া থানার আমিরাবাদ গ্রামের বসবাস করেন তিনি। বন্য প্রাণী, কুকুর, বিড়াল রেসকিউ এবং চিকিৎসার কাজ তিনি শুরু করেন ২০২০ সালে। কোথাও অসুস্থ কোনো প্রাণী পড়ে থাকলে পকেটের টাকা খরচ করে চিকিৎসা করান। অনেক সময় কুকুরের শরীরে-মুখে হাড় আটকে যায়। তখন তাদের বায়েজিদ সাহায্য করেন। পটুয়াখালীর উপকূলের থানা বাউফল, দুমকি, দশমিনা, কলাপাড়া, গলাচিপার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটে বেড়ান বায়েজিদ। নানান প্রতিকূলতা মোকাবিলা করেই এগিয়ে যান। কখনো কখনো মানুষের কথায় খারাপ লাগলেও তৃণমূল মানুষের ভালোবাসা তাঁর কাজের অনুপ্রেরণা বলে জানান। একটি অসুস্থ প্রাণী রেসকিউ করে পরে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ হলে বনে ছেড়ে দেওয়াকেই আনন্দের বিষয় বলে মনে করেন তিনি।
ঝুঁকিপূর্ণ হলেও স্নেক রেসকিউ টিম থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বায়েজিদ শুরু করেছেন সাপ রেসকিউ কার্যক্রম। মানুষ সাপুড়ে বললেও সেসব বায়েজিদ একদমই পাত্তা দেন না। এ পর্যন্ত তিনি পদ্ম গোখরা, খৈয়া গোখরা, রাসেলস ভাইপার, শঙ্খিনীসহ অসংখ্য সাপ রেসকিউ করেছেন। সাতটি অসুস্থ সাপ চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে ছেড়ে দিয়েছেন বনে। সাপ রেসকিউ বা উদ্ধার অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ কাজ বলে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেন বায়েজিদ। তারপরও দাঁড়াশ, তামাটে মাথা দুধরাজ, ঘরগিন্নির ছোবল খেয়েও দমে যাননি তিনি। অ্যানিমেল লাভার অব পটুয়াখালী একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রাণিকল্যাণ ও পরিবেশবাদী সংগঠন। এর স্বেচ্ছাসেবক বায়েজিদ।