হোম > শিক্ষা > ক্যাম্পাস

ক্ষুদ্র আয়ে ঈদ আনন্দ

পড়াশোনার পাশাপাশি অর্থ উপার্জন জেনারেশন জেডের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ঈদের আনন্দ আরও বাড়িয়ে তোলে এই আয়। এমনই কয়েকজনের গল্প শুনিয়েছেন জুবায়ের ইবনে কামাল

সুবিধাবঞ্চিতদের সঙ্গে কাটবে ঈদ
আশীব ফেরদৌস অংকন
এমবিবিএস, শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ
পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করে আয় করার ব্যাপারে আমার আগ্রহ ছিল আগে থেকেই। লেখালেখি করার শখ ছিল। ২০২২ সালে আমার প্রথম বই প্রকাশিত হয়। এরপর প্রতিবছর বইমেলায় বই প্রকাশ হচ্ছে। বইয়ের রয়্যালটির একটি অংশ আমার হাতে আসে। আমি খেয়াল করে দেখলাম, ঠিক ঈদের আগে আগে রয়্যালটির টাকা হাতে পাই। একদিকে বই লিখে আয়, অন্যদিকে ঈদের আগে হাতে কিছু টাকা আসা—সব মিলিয়ে আনন্দটা অন্য রকম। এই টাকা দিয়ে কয়েক বছর মা-বাবাকে ঈদের কেনাকাটা করে দিয়েছি। এ বছর অবশ্য ঈদে রয়েছে ভিন্ন পরিকল্পনা। করোনা মহামারির সময় বন্ধুদের নিয়ে একটি সংস্থা খুলেছিলাম সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য। এই ঈদে নিজের আয় দিয়ে ওদের সঙ্গেই ঈদের আনন্দটা ভাগ করে নেব।

বাবা ছাড়া প্রথম ঈদে মায়ের জন্য উপহার থাকবে
মালিহা বিনতে নজরুল
খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান, গভ. কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্স
পড়াশোনার পাশাপাশি অন্যদের পড়াতেও ভালো লাগে। করোনা মহামারির সময় অনলাইনে দুজন শিক্ষার্থীকে পড়িয়ে আমার আয় শুরু হয়েছিল। এরপর টিউশনি শুরু করি। ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হলে বই পড়ার শখও আয়ের উৎস হয়ে যায়। এর বাইরে সময় পেলে কারও হয়ে ভিডিও নির্মাণ করে দিই কিংবা কারও ভিডিওতে কণ্ঠ দিই। আমার আগের দুই ঈদে খরচের একমাত্র জায়গা ছিল পরিবার। পড়াশোনার কারণে ঢাকায় থাকি। তাই ঈদে সামান্য আয় দিয়ে কেনা উপহার নিয়ে যখন বাড়ি যেতাম, বাবা-মা খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়তেন। এবার বাবা ছাড়া প্রথম ঈদ। নিশ্চয়ই মায়ের কাছেও এই ঈদটা অন্য রকম। এবারও আগের মতোই উপহার নিয়ে বাড়ি যাব, মায়ের জন্য বিশেষ কিছু।

চাঁদরাতে হইহুল্লোড় করব
জান্নাতুন না’য়ীম নিঝুম
ফার্মেসি বিভাগ, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে থেকে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের পড়াতাম। সেখান থেকে যে আয় হতো, তা দিয়ে ঈদে কেনাকাটা করা সেভাবে সম্ভব হতো না। কিন্তু যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই, তখন টিউশনের আয়ের মাত্রাটা বড় হতে থাকে। একসঙ্গে হাতে বেশ কিছু টাকা চলে আসায় ঈদে পরিকল্পনা করি শুধু মা-বাবাকে নয়; চাচা-চাচিসহ বেশ কিছু আত্মীয়কে ছোট ছোট উপহার দেব।

আরেকটা মজার কাজ করেছিলাম সেবার, সবাইকে উপহারের সঙ্গে একটা করে চিরকুটও লিখে দিয়েছিলাম। তবে উপহার দেওয়ার পাশাপাশি আমার আয় দিয়ে ঈদের বাজারও করা হয়েছিল। তখন নিজেকে অবশ্য একটু বড় বড় লাগছিল। এবার নিজের ক্ষুদ্র আয় দিয়ে চাঁদরাতে হইহুল্লোড় করব, মেহেদি দেব। কিছু কেনাকাটাও করে ফেলেছি।

সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য উপহার কিনব
ফাহিম মোর্শেদ
কম্পিউটারবিজ্ঞান প্রকৌশল, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি
পড়াশোনার বাইরে আয় করার জন্য টিউশনি, লেখালেখি এবং মাঝে মাঝে ভিডিওতে কণ্ঠ দিই। মূলত অন্যদের পড়ানোই আমার আয়ের মূল উৎস। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় নিজের হাতখরচ চালানোর চিন্তা থেকেই আয় করা শুরু। ধীরে ধীরে বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আয় বাড়তে থাকলে প্রতি ঈদে সুবিধাবঞ্চিতদের ঈদসামগ্রী উপহার দেওয়া শুরু করি। এ বছরও বেশ কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত আছি, যারা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করে। এর বাইরেও এমন একটি স্কুলের সঙ্গে আছি, যেখানে ৬০ জনের বেশি সুবিধাবঞ্চিত শিশু লেখাপড়া করে। এবারের ঈদে আয়ের বড় একটা অংশ হয়তো চলে যাবে তাদের জন্য ঈদের উপহার কিনতে।

মায়ের জন্য সোনার গয়না কিনব
ফারহানা ইসলাম
বিবিএ, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি
কলেজে পড়ার সময় ফেসবুক কাজে লাগিয়ে নিজের একটা ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করেছিলাম। তবে পড়াশোনার চাপ বাড়ায় সেখানে সময় দেওয়াটা কমে গেছে। সেই ব্যবসা থেকে ছিল আমার প্রথম ‘অফিশিয়াল’ আয়। ঈদে অন্যদের কাছ থেকে যে উপহার পাই, সেটা দিয়ে চলে যেত। তাই ছোটখাটো উপহার নিয়ে বাসায় হাজির হতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর একটা প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন কাজ শুরু করি। সেখান থেকে হওয়া আয় জমিয়ে রেখেছিলাম। তা ছাড়া মাঝে কিছু সময় আর্ট শিখিয়েও খানিকটা আয় হয়েছে। সব মিলিয়ে এবারের ঈদে বেশ বড় অঙ্কের টাকা হাতে আছে। আর এই টাকা দিয়ে ঈদে মাকে সোনার গয়না উপহার দেব।

সহকর্মীদের চমকে দেব
রাউফুর রহমান
ডেটা সায়েন্স, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
আমি পড়াশোনা করি যে বিষয় নিয়ে, বাস্তবে কাজ করি সেই বিষয়ের বাইরে। বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটি বই বিপণন সংস্থার জনসংযোগ বিভাগে কাজ করি। যদিও উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোনোর আগে থেকেই আমি টুকটাক আয় করতাম। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে সেটি একটি নির্দিষ্ট আয়ের দিকে রূপ নেয়। প্রথমবার নিজের আয় দিয়ে ঈদে মা-বাবা ও ছোট ভাইয়ের জন্য কেনাকাটা করেছিলাম। তখন মনে হয়েছিল আমি অনেক বড় হয়ে গেছি। নিজের মধ্যে অন্য রকম এক অনুভূতি হচ্ছিল। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পড়াশোনার চাপ বাড়ছে। এবার ঈদে ভেবেছি নিজের সহকর্মীদের ঈদ উপহার দিয়ে চমকে দেব। যদিও আপনারা জেনে গেলেন চমকের পরিকল্পনা। তবে এটা প্রকাশের আগেই উপহার পৌঁছে যাবে প্রিয় সহকর্মীদের হাতে।

উচ্চশিক্ষা কোনো বিশেষ শ্রেণির জন্য নয়, এটি সবার অধিকার

পাঠকবন্ধুর মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপন

উত্তরার গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল: স্বর্ণ রৌপ্য ব্রোঞ্জসহ ৭ অ্যাওয়ার্ড জয়

যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা: চিকিৎসা নৃবিজ্ঞানে বাংলাদেশি মিথিলার পথচলা

কৃষক বাবার স্বপ্নপূরণে মেডিকেলে পড়ছেন উর্মি

জকসু নির্বাচন: তিন দিনেও প্রকাশ করা হয়নি ব্যালট নম্বর, প্রচারে নেমে বিপাকে প্রার্থীরা

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২৪-এর আকাঙ্ক্ষা ধারণ করেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে: জবি উপাচার্য

এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

শিক্ষার্থীদের বিজয় দিবসের ভাবনা

দিনে রাজমিস্ত্রির কাজ রাতে পড়াশোনা