পাঠ্যবইয়ের পাতায় উঠে এসেছে ‘আওয়াজ উডা’ গানের শিল্পী হান্নান হোসাইন শিমুল ও ‘কথা ক’-এর মুহাম্মদ সেজান। সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি বইয়ের পাঠ্যবইয়ের নিউ জেনারেশন অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে এই দুই র্যাপারের কথা। পাঠ্যবইয়ে সেজান ও হান্নানের জায়গা পাওয়ার পর অনেকেই করছেন সমালোচনা। তাঁদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা কী শিখবে বলেও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। এবার সেই সমালোচনার জবাব দিলেন সেজান। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে সেজান জানালেন, থামানো যাবে না এই জোয়ার।
শনিবার দীর্ঘ এক পোস্টে সেজান লেখেন, ‘আপনের আমার সবারই দশ রকম দোষ-গুণ আছে। সঠিক ভুল মিলাইয়াই মানুষ। কে নির্দোষ, কে নিষ্পাপ—এইটা সৃষ্টিকর্তা ভালো জানেন।... আমার কাছে বিদ্যালয় বা যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হইল এমন একটা জায়গা, যেইখানে মানুষ ভালো-মন্দের বিষয়ে জানব, মন্দরে ত্যাগ আর ভালোরে গ্রহণ করা শিখাইব। আপনে অবশ্যই চাইবেন না যে আপনার সন্তান আপনার দোষগুলা পাক, আপনে চাইবেন আপনার সন্তান আপনার ভালো গুণগুলা পাক। মানুষের মতো মানুষ হউক। আমিও চাই আমার ভালো-মন্দ থেইকা মানুষ ভালোটা শিখুক, অনুপ্রাণিত হউক, আমারেও অনুপ্রেরণা দেক।’
জুলাই আন্দোলনের সময় তাঁদের ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এই র্যাপার লেখেন, ‘আপনের সন্তান যহন পুলিশের হাতে মাইর খাইছে, আমরা আপনের সন্তানের হইয়া শোর তুলছি, অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ করছি, আপনে যহন অফিস শ্যাষে ফিরতে যাইয়া দৌড়ানি খাইসেন.. আমরা আপনের হইয়া আওয়াজ তুলসি, কথা কইসি। আপনেগো লেইগা মাঠে নামছি। আর আপনে যহন নিশ্চিন্ত হইলেন, যখন স্বস্তির নিশ্বাস ফালাইলেন, আপনেরা চাইলেন আমরা হারাইয়া যাই... যাগো লেইগা আমরা গান গাইছি, ঘরছাড়া, এলাকাছাড়া হইছি, জেল-হাজত রক্তপাত দেখছি, তারা আমাগো না চিনুক, আমগো ব্যাপারে না জানুক!’
আন্দোলনের সময় প্রতিবাদ করায় পেয়েছিলেন হুমকি। তবু কথা বলা বন্ধ করেননি। তাই সমালোচনা করেও এই জোয়ার বন্ধ করা যাবে না বলে অভিমত সেজানের। তাঁর ভাষ্য, ‘অনেকে আমগো না চিইন্না, না জাইন্নাও আমগো নাম লেখতাছে দেয়ালে দেয়ালে, পেপারে-পত্রিকায়, বইয়ের পাতায়। আপনে থামাইতে পারবেন এই জোয়ার? আপনের আগে যারা আমগো মুখ বন্ধ করতে চাইসে, অ্যারেস্ট, খুনের ভয়, থ্রেট দিসে তারাও তো পারে নাই। ... হিপ হপ জনমানুষের আওয়াজ, অন্তরের ভাষা। আপনে দশটা খারাপের মধ্যে একটা ভালোরে খুঁইজা নেন। মানুষরে অনুপ্রাণিত করেন।’