ভারতের চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে নবনির্বাচিত এমপি এবং অভিনেত্রী কঙ্গনা রনৌতকে থাপ্পড় মারার ঘটনায় মুখ খুলেছেন প্রবীণ অভিনেত্রী শাবানা আজমি। তিনি বলেছেন, ‘নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের নিজ হাতে আইন তুলে নেওয়া উচিত নয়।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার হিমাচল প্রদেশের মাণ্ডি থেকে দিল্লি যাচ্ছিলেন কঙ্গনা। বেলা সাড়ে ৩টা নাগাদ হরিয়ানার চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে পৌঁছালে সেখানকার সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের (সিআইএসএফ) নারী কনস্টেবল কুলবিন্দর কৌর তাঁকে থাপ্পড় মারেন।
এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় শাবানা আজমি আজ শনিবার এক এক্স পোস্টে লিখেছেন, ‘কঙ্গনা রনৌতকে আমি সেভাবে পছন্দ করি না। কিন্তু ‘থাপ্পড়’ উদ্যাপনের এই কোরাসে আমি যোগ দিতে পারছি না। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরাই যদি আইন নিজেদের হাতে তুলে নিতে শুরু করে, তাহলে আমরা কেউই নিরাপদ থাকতে পারব না।’
কঙ্গোনা রনৌতকে থাপ্পড় মারার ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল হওয়া ফুটেজে দেখা গেছে, ‘রনৌতকে একটি চেক-ইন কাউন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং যখন তিনি সেখানে পৌঁছান, তখন ঝগড়া শুরু হয়।’ তবে ভিডিওতে রনৌতকে চড় মারার দৃশ্য দেখা যায়নি।
পরে একটি ভিডিও বার্তায় রনৌত পাঞ্জাবের ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসবাদ নিয়ে উদ্বিগ্ন বলে জানান। ওই ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমি নিরাপদে আছি। আমি পুরোপুরি ভালো আছি। ঘটনাটি ঘটেছিল সিকিউরিটি চেক-ইনে। নারী গার্ড আমার পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তিনি তখন পাশ থেকে এসে আমাকে আঘাত করেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কেন সে আমাকে আঘাত করেছে? তিনি বলেন, ‘‘আমি কৃষকদের সমর্থন করি।’ কিন্তু আমার উদ্বেগ হলো, পাঞ্জাবে সন্ত্রাস বাড়ছে।’
কঙ্গোনা রনৌত ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এক্স পোস্টে লিখেছিলেন, ‘নারীরা ১০০ রুপির জন্য কৃষকদের প্রতিবাদে যোগ দিয়েছেন’—অভিনেত্রীর এমন মন্তব্য সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল।
গত ফেব্রুয়ারিতে ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের মধ্যে শাম্ভু সীমান্তসহ ভারতের রাজধানী দিল্লির প্রান্তে টিকরি বা সিঙ্গু সীমানা থেকে বারবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল কৃষকদের ডাকা ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের জেরে। আন্দোলনকারী কৃষকদের প্রতিহত করতে কংক্রিট ও লোহার ব্যারিকেড, জলকামান, ড্রোন ব্যবহার করে ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের শেল ব্যবহার করা হয়। এই আন্দোলনের মূল দাবিগুলো ছিল ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি নিশ্চয়তা (এমএসপি), কৃষিঋণ মওকুফ এবং স্বামীনাথন কমিশনের সমস্ত সুপারিশ বাস্তবায়ন, পুলিশ মামলা প্রত্যাহার এবং লাখিমপুর খেরি সহিংসতার শিকারদের জন্য ন্যায়বিচারের জন্য আইনি গ্যারান্টি ইত্যাদি।
এদিকে এ ঘটনায় ওই নারী কনস্টেবলকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। কুলবিন্দর কৌরকে বরখাস্ত ও মামলা দায়েরের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ভারতে কৃষক আন্দোলনের একাধিক সংগঠন। কৃষকদের সংগঠনগুলো ৯ জুন পাঞ্জাবের মোহালিতে ‘ইনসাফ’ পদযাত্রার পরিকল্পনা করেছে। একই সঙ্গে বিমানবন্দরে যে ঘটনা ঘটেছে, তাঁর সঠিক তদন্তেরও আহ্বান জানিয়েছে তারা।
বিনোদন সম্পর্কিত আরও খবর পড়ুন: