‘ও ধান ভানিরে ঢেঁকিতে পাড় দিয়া
ঢেঁকি নাচে, আমি নাচি, হেলিয়া দুলিয়া
ও ধান ভানিরে।’
জনপ্রিয় এই গানের তালে তালে নৃত্য পরিবেশের মধ্যে দিয়ে জয়পুরহাটের পালিত হয়েছে নবান্ন উৎসব। মঙ্গলবার বিকেলে শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দানে এই আয়োজন করা হয়। জয়পুরহাট নবনাট্য সংঘ, এ. কে. এম আব্দুল আজিজ সংগীত ভুবন ও একুশে আবৃত্তি পরিষদ সম্মিলিতভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
‘কাটিয়া আনোরে ধান, আগোনে হবে নবান, নয়ালী ধানের ক্ষীর পিঠা ও পাকান।’ -শীর্ষক গানের ব্যানারে জয়পুরহাটে নবান্ন উৎসব পালনে গান, নৃত্য, আবৃত্তি ও গীতিনাট্য অনুষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘ সময় পর এমন আয়োজন দেখতে ভিড় জমিয়েছিল বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
আয়োজকেরা বলেন, 'ঋতু বৈচিত্র্যের হেমন্ত দিনে, আবহমান বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতির অংশ হিসেবেই এমন আয়োজন। এমন লোকজ অনুষ্ঠানগুলো সকল ধর্ম ও বর্ণের বাঙালিকে একত্রে বসবাসের অনুপ্রেরণা দিতে পারে। তাঁদের মনে অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারে। তাই দেশের সকল শহর, নগর, গ্রাম-গঞ্জ, পাড়া-মহল্লায় এ ধরনের অনুষ্ঠান বেশি বেশি করা এখন সময়ের দাবি। তাতেই দেশের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি শিথিল হবে। সেই বোধ থেকেই শান্তি প্রিয় এ দেশের মানুষের মাঝে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প থেকে বেরিয়ে এসে তাঁদেরকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতেই এই আয়োজন।
দর্শক মেরিনা সুলতানা বলেন, অনুষ্ঠানে এসে, সবকিছু দেখে, উপভোগ করতে পেরে খুব ভালো লাগল। পুরোনো দিনের কথা মনে নাড়া দিল। এমন আয়োজন বেশি বেশি করা প্রয়োজন।
'এ. কে. এম আব্দুল আজিজ সংগীত ভুবন' সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তামান্না ইয়াসমিন বলেন, ‘নবান্নের অনুষ্ঠান কি সেগুলোই আমরা মানুষকে জানাতে চাই, ছেলেমেয়েদেরকে জানাতে চাই। অনেক দিন বন্ধ ছিল এই অনুষ্ঠানগুলো। আমরা আবার দেশবাসীকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে একুশে আবৃত্তি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লালন হোসেনের সঞ্চালনায় দর্শকদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জয়পুরহাট নবনাট্য সংঘের সভাপতি রাজা চৌধুরী।