নিজস্ব প্রতিবেদক, টেকনাফ থেকে
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সেন্ট মার্টিন দ্বীপসহ উপকূল থেকে দূরে চরগুলোর নিম্নাঞ্চলে ৮ থেকে ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা রাতেই বিশেষ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। যার ফলে সকালে যেন সবাই প্রস্তুতি নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারে।’
সেন্ট মার্টিন নিয়ে তিনি বলেন, ‘যেহেতু এটি কক্সবাজার থেকে দূরে এবং ঘূর্ণিঝড় অতিক্রম করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হতে পারে।’
প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস সম্পর্কে জেনেছি। আজ রাতে কিছু কিছু শেল্টার খুলে দেওয়া হয়েছে। কাল সকালের মধ্যে বাকিগুলো খুলে দেওয়া হবে।’
মজিবুর বলেন, ‘সেন্ট মার্টিনে এখন প্রায় ৯ হাজার লোক রয়েছে। যে শেল্টারগুলো আছে, সেগুলোর বেশির ভাগই দুই থেকে তিনতলা। যারা আজ ও গতকাল চলে গিয়েছে তারা কেউ এখানে স্থায়ী নয়। আগামীকাল সকালের মধ্যে সবাইকে শেল্টারে নিতে পারব। সাত দিনের শুকনো খাবার মজুত রয়েছে। রাতের জন্য খিচুড়ি রান্না করা হয়েছে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঘূর্ণিঝড়ের বিশেষ বিজ্ঞপ্তি নম্বর ১২-এ বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামীকাল শনিবার (১৩ মে) সন্ধ্যা থেকে কক্সবাজার ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবল হিসেবে ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ রয়েছে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।