অনলাইন ডেস্ক
সৌদি আরবের জলসীমায় সামুদ্রিক কাছিমদের সবচেয়ে বড় আবাসস্থলের খোঁজ পাওয়া গেছে। লোহিতসাগরের ফোর সিস্টার আইল্যান্ডসের আশপাশের সাগরে এই বসতির সন্ধান মিলেছে বলে নিশ্চিত করেছে জেনারেল অর্গানাইজেশন ফর দ্য কনজারভেশন অব কোরাল রিফস অ্যান্ড মেরিন টার্টলস ইন দ্য রেড সি (শামস)।
এই গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশগত আবিষ্কার সামুদ্রিক কাছিম এবং তাদের বিভিন্ন আবাসস্থলের সুরক্ষার লক্ষ্যে চলমান উদ্যোগের অংশ। সৌদি ভিশন ২০৩০-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই প্রাণীদের টিকে থাকা নিশ্চিতের চেষ্টা করা হচ্ছে এর মাধ্যমে।
গতকাল শনিবার ‘শামস’-এর প্রকাশ করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করে সৌদি গেজেট। শামসে’র সিইও ড. খালেদ ইসফাহানি বলেন, ফোর সিস্টার দ্বীপপুঞ্জকে কচ্ছপের আবাসস্থল রক্ষার জন্য একটি প্রজাতি ব্যবস্থাপনা এলাকা হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।
এই পদক্ষেপ সৌদি আরবের পরিবেশগত বিভিন্ন লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। জীববৈচিত্র্য রক্ষায়ও এটি ভূমিকা রাখবে সন্দেহ নেই। আরও পরিষ্কারভাবে বললে, এটি ২০৩০ সালের মধ্যে সৌদি আরবের ৩০ শতাংশ স্থল ও সমুদ্র অঞ্চলকে প্রাকৃতিক সংরক্ষণ এলাকায় পরিণত করার একটি বিস্তৃত পরিকল্পনার অংশ।
ফোর সিস্টারস আইল্যান্ডসের চার দ্বীপ মর্মর, দাহরেব, মালাথু এবং জাদির—সাগরের কাছিমের প্রজনন ও বসতি এলাকা হিসেবে বিখ্যাত। এই দ্বীপপুঞ্জে আড়াই হাজারের বেশি কাছিমের বাসার সন্ধান মিলেছে এখন পর্যন্ত, যা লোহিতসাগরে বিপন্ন সামুদ্রিক কচ্ছপের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজননক্ষেত্র হিসেবে একে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
লক্ষণীয় বিষয় হলো, সামুদ্রিক কাছিমগুলো ধারাবাহিকভাবে প্রতিবছর এই একই জায়গায় ফিরে আসে বাসা বাঁধতে, যা এই প্রজাতির বেঁচে থাকার জন্য অঞ্চলটিকে সংরক্ষণ করার গুরুত্ব চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। তা ছাড়া দ্বীপপুঞ্জটি বিপন্ন গ্রিন টার্টল এবং মহাবিপন্ন হকসবিল কাছিমের গুরুত্বপূর্ণ আবাসস্থল, যা একে এই অঞ্চলের অন্যতম উল্লেখযোগ্য সামুদ্রিক কাছিম বসবাস ও প্রজনন স্থানগুলোর একটিতে পরিণত করেছে।
ড. ইসফাহানি বলেন, তাঁদের সংস্থাটি বর্তমানে লোহিত সাগর উপকূলে সামুদ্রিক কচ্ছপের বাসা বাঁধার স্থানগুলো রক্ষা করার জন্য একটি ব্যাপক ব্যবস্থাপনার কৌশল তৈরি করছে। শামসের পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের আন্তরিক চেষ্টায় ১৮০টিরও বেশি বাসা বাঁধার স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এই অনন্য সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের চারপাশে টেকসই পর্যটন এবং বিনোদনের সুযোগ বৃদ্ধি করাও এ পরিকল্পনার লক্ষ্য। উদ্যোগটি সংরক্ষিত এলাকাটিকে আরও সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করার পাশাপাশি সামুদ্রিক কাছিমগুলোকে তাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থলে ঝুঁকিমুক্তভাবে বিচরণ করার সুযোগ করে দেবে।
এই আবিষ্কার লোহিতসাগরের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় শামসের বড় উদ্যোগের একটি অংশও বটে। সামুদ্রিক কাছিম বাস্তুতন্ত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য তাদের বেঁচে থাকাটা খুব জরুরি। আর এদের রক্ষা করার এই প্রচেষ্টা এবং সৌদি গ্রিন ইনিশিয়েটিভ এবং ভিশন ২০৩০ একই সূত্রে গাঁথা। প্রাকৃতিক ঐতিহ্য এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সৌদি আরবের জাতীয় প্রতিশ্রুতিকে যা প্রতিফলিত করে ।