Ajker Patrika
হোম > পরিবেশ

একেক জায়গায় তাপমাত্রা একেক রকম হয় যে কারণে

অনলাইন ডেস্ক

একেক জায়গায় তাপমাত্রা একেক রকম হয় যে কারণে

গরমে নাভিশ্বাস। প্রাণ ওষ্ঠাগত। বিগত ৫৮ বছরের ইতিহাসে এত গরম পড়েনি ঢাকায়। এমনকি সারা বাংলাদেশেই এত গরম পড়েনি আগে। চুয়াডাঙ্গায় গতকাল তাপমাত্রার পারদ উঠেছিল সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রিতে। টানা ১৪ দিন ধরে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে। এর আগে ২০১৪ সালে চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। 

আবহাওয়া অফিস বলছে, গতকাল শনিবার ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি গত ৫৮ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। প্রশ্ন হচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় তাপমাত্রা বিভিন্ন রকম হয় কেন? 

বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীতে তাপমাত্রার প্রধান উৎস হচ্ছে সূর্য। যে জায়গায় যত বেশি সূর্যের আলো পড়বে, সেই জায়গার তাপমাত্রা তত বেশি হবে। 

কিন্তু সূর্যের আলো কোথায় কী পরিমাণে পড়বে, সেটি নির্ভর করে বিষুবরেখার ওপর। বিষুবরেখা থেকে যে জায়গা যত দূরে থাকে, সে জায়গায় সূর্যের আলো তত কম পড়ে। 

মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, বিষুবরেখা আবার কী? বিষুবরেখা হচ্ছে পৃথিবীকে বিভক্তকারী একটি কাল্পনিক বৃত্ত। বিষুবরেখাকে নিরক্ষরেখাও বলা হয়। এই রেখার ওপরের দিকে থাকা জায়গাগুলো পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে পড়েছে। আর নিরক্ষরেখার নিচের জায়গাগুলো পড়েছে দক্ষিণ গোলার্ধে। 

তাপমাত্রার ভিন্নতার আরেক কারণ ‘সমুদ্র থেকে দূরত্ব’
কোন জায়গার তাপমাত্রা কেমন হবে সেটি পরিমাপ করার আরেকটি উপায় হচ্ছে, জায়গাটি সমুদ্র থেকে কত দূরে অবস্থিত। কারণ পানির কারণে সমতলভূমির তাপমাত্রার ওঠানামা অনেক দ্রুত হয়। অর্থাৎ সমতলভূমি যেমন দ্রুত গরম হয়, তেমনি দ্রুত শীতলও হয়। 

সমুদ্র উপকূলের কাছাকাছি জায়গাগুলো গ্রীষ্মকালে খুব একটা উত্তপ্ত হয় না। কারণ জায়গাগুলো পানির কাছাকাছি থাকে। আবার শীতকালেও এই জায়গাগুলো খুব একটা ঠান্ডা হয় না, কারণ তারা উষ্ণ সমুদ্রের কাছাকাছি থাকে। 

এ ছাড়া সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে আপনি যত ওপরে উঠবেন, তাপমাত্রা তত কম অনুভব করবেন। এ কারণে পাহাড়চূড়া বেশির ভাগ সময় ঠান্ডা থাকে এবং তুষারাবৃত থাকে। 

বলে রাখা ভালো, সমুদ্রের উচ্চতা কত তা বোঝাতে ‘সমুদ্রপৃষ্ঠ’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। 

এই সবকিছু মিলিয়ে আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার তাপমাত্রা যে আলাদা আলাদা হয়, তার পেছনে দায়ী মূলত বিষুবরেখা ও সমুদ্রপৃষ্ঠ। 

১. অ্যান্টার্কটিকা
অ্যান্টার্কটিকাকে বলা হয় পৃথিবীর শীতলতম স্থান। এখানকার তাপমাত্রা মাইনাস ৮৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায়। এর কারণ হচ্ছে, অ্যান্টার্কটিকা বিষুবরেখা থেকে অনেক দূরে।

সাধারণত সূর্যের তাপ ও আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ভেতর দিয়ে যায় এবং যেতে যেতে এটি একটি বিস্তৃত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের গ্রীষ্মকালে অ্যান্টার্কটিকায় সূর্যের আলো খুব কম পড়ে বলে জায়গাটি প্রচণ্ড শীতল থাকে। 

২. ডেথ ভ্যালি
যুক্তরাষ্ট্রের ডেথ ভ্যালি হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণ জায়গাগুলোর একটি। সেখানে তাপমাত্রা ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠে যায়। ডেথ ভ্যালি এত গরম হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে এর উচ্চতা। এই জায়গার কিছু অংশ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮৬ মিটার নিচে অবস্থিত। এ কারণে জায়গাটিতে তাপমাত্রা বেশি থাকে। 

৩. গ্লাসগো
সমুদ্র উপকূলের কাছাকাছি জায়গাগুলো গ্রীষ্মে শীতল এবং শীতকালে উষ্ণ হতে থাকে। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো জায়গাটি সমুদ্র উপকূলের কাছাকাছি হওয়ায় এটি গ্রীষ্মে উচ্চ তাপমাত্রা ধারণ করে না। 

৪. মস্কো
রাশিয়ার মস্কো শহরটি সমুদ্র উপকূল থেকে অনেক দূরে। এ কারণে গ্রীষ্মকালে শহরটিতে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে এবং শীতকালে তাপমাত্রা কমতে থাকে। 

তথ্যসূত্র: বিবিসি অবলম্বনে মারুফ ইসলাম

আরও খবর পড়ুন:

গরম বাড়তে পারে, আবার বৃষ্টিরও আভাস

ঢাকায় বাতাসের উন্নতি, শীর্ষে লাহোর

ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চলবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

ঢাকার বাতাস আজও অস্বাস্থ্যকর, শীর্ষে লাহোর

শহরের জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য খাল বাঁচাতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

পরিবেশ দূষণকারী ও নদী দখলকারীদের নির্বাচনে ‘অযোগ্য’ ঘোষণার দাবি এইচআরপিবি

ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর, দূষণের শীর্ষে আমস্টারডাম

আজ ঢাকার বাতাসের কিছুটা উন্নতি, শীর্ষ দূষণের শহর বাগদাদ

৩১ প্রজাতির বন্য প্রাণী বিলুপ্ত, হারানোর পথে ৩৯০ প্রজাতি

শ্রবণস্বাস্থ্য রক্ষায় শব্দদূষণ রোধ জরুরি: পরিবেশ উপদেষ্টা