বিশ্বের প্রথম অক্টোপাসের খামার তৈরি করছে স্পেন। দেশটির সমুদ্র গবেষণা বিষয়ক সংস্থা ওশেনোগ্রাফিক ইনস্টিটিউটের অধীনে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে খামারটি তৈরি করবে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান নুয়েভা পেসকানোভা। সম্প্রতি অক্টোপাসের খামারের পরিকল্পনা প্রস্তাব বিষয়ক গোপনীয় নথি প্রকাশ পায়। আর এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা।
ওই গোপনীয় পরিকল্পনা প্রস্তাবের নথি বিবিসিকে দিয়েছে প্রাণী অধিকার সচেতনতা নিয়ে কাজ করা ইউরোগ্রুপ ফর অ্যানিমেলস। প্রস্তাবটি ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের জেনারেল ডিরেক্টরেট অব ফিশিং বরাবর পাঠিয়েছে নুয়েভা পেসকানোভা। যদিও এ বিষয়ে অনুরোধ করে কোনো সাড়া পায়নি বিবিসি।
নথিতে থাকা পরিকল্পনা প্রস্তাব অনুসারে অক্টোপাসের প্রতি অমানবিক আচরণের ইঙ্গিত মিলেছে। যদিও এই চাষ পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানটি অক্টোপাসের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, খামারটি বছরে ৩ হাজার টন অক্টোপাস উৎপাদন করবে। যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মতো প্রিমিয়াম আন্তর্জাতিক বাজারে জোগান দেওয়া হবে এসব অক্টোপাস। তবে অক্টোপাসগুলোকে কী অবস্থায় রাখা হবে সে সম্পর্কে কোনো বিবরণ প্রকাশ করতে অস্বীকার করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
নুয়েভা পেসকানোভার দাবি, অক্টোপাস চাষ টেকসই, নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর হবে। এর ফলে মৎস্য শিকারে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে চাপ কমবে বলে মনে করে তারা।
অক্টোপাসের এই বাণিজ্যিক চাষ প্রক্রিয়া এবং হত্যার পদ্ধতিকে অমানবিক বলছেন বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা। গোপনীয় নথি থেকে জানা যায়, একটি পানির কন্টেইনারে মাইনাস ৩ সেলসিয়াসের তাপমাত্রার মধ্যে রেখে হত্যা করা হবে অক্টোপাসগুলোকে। আর এই পদ্ধতিতে মৃত্যু ধীরে এবং যন্ত্রণাদায়ক হয়। সে ক্ষেত্রে জেলেরা যেভাবে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে ওই পদ্ধতিকে কম যন্ত্রণার বলছেন অনেক।
এর আগে এভাবে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কখনই অক্টোপাস চাষ করা হয়নি। যে পদ্ধতিতে চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হবে একে ‘নিষ্ঠুর’ বলে অভিহিত করেছেন বিজ্ঞানীরা।