Ajker Patrika
হোম > পরিবেশ

বিশ্বে সবচেয়ে ভারী শিল পড়েছিল গোপালগঞ্জে, শিলাবৃষ্টিতে মারা যান ৪০ জন

জাহাঙ্গীর আলম

বিশ্বে সবচেয়ে ভারী শিল পড়েছিল গোপালগঞ্জে, শিলাবৃষ্টিতে মারা যান ৪০ জন

সাধারণত চৈত্র ও বৈশাখ মাসে দেশে শিলাবৃষ্টি হয়। এই সময় তাপমাত্রা থাকে অনেক বেশি। ফলে ভূপৃষ্ঠের গরম বাতাস জলীয়বাষ্প নিয়ে দ্রুত ওপরের দিকে উঠতে থাকে। এতে ঊর্ধ্বমুখী একটা চাপ তৈরি হয়। এই চাপের কারণেই উল্লম্ব, বিস্তৃত ও ভারী মেঘমালা সৃষ্টি হতে দেখা যায়। বেশি তাপমাত্রার কারণে বিপুল পরিমাণ জলীয়বাষ্প ঊর্ধ্বমুখে ছুটতে থাকে। এতে নিচের বায়ুস্তরে দ্রুত তাপমাত্রা নেমে যায়। বিপুল স্তরীভূত মেঘ এবং চাপ ও তাপের ব্যাপক তারতম্যের কারণে চৈত্র–বৈশাখেই বজ্রপাত হয় বেশি। আকাশে ঘন ঘন বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা যায়। বজ্রপাত সৃষ্টিকারী মেঘই কিন্তু শিল তৈরিতে বড় ভূমিকা রাখে। 

এককথায়, প্রবল বজ্রঝড়ের মেঘ থেকে শিলাবৃষ্টি হয়। বিশেষ করে যেই মেঘের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা, বিপুল তরল পানি, উল্লম্ব বিস্তৃতি, বড় পানির ফোঁটা এবং মেঘের স্তরের একটি বড় অংশের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে (শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস) থাকে সেই মেঘ থেকেই হয় শিলাবৃষ্টি। 

বরফের টুকরার সঙ্গে শিলের বড় পার্থক্য রয়েছে। শীতের দেশে তুষার পাত দেখে অনেকে বিভ্রান্ত হতে পারেন। কিন্তু শিল হলো বরফের অনিয়মিত পিণ্ড বা পিণ্ডের সমষ্টি। বরফের টুকরা বা তুষার সাধারণত ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে পড়ে। শীতকালের বরফ পিণ্ডগুলো সাধারণত ২–৫ মিলিমিটার ব্যাসের হয়। আর তুষার হয় গুঁড়োগুঁড়ো অথবা সুচাল। আর শিলের আকার হয় ৫ মিলিমিটার থেকে ১৫ সেন্টিমিটার। 

শিলাবৃষ্টি নিয়ে নথিভুক্ত ইতিহাসে সবচেয়ে ভারী শিলটি পড়েছিল বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলায়। ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে ভারী শিলটি পড়েছিল ১৯৮৬ সালের ১৪ এপ্রিল, বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলায়। যেটির ওজন ছিল ১ দশমিক ০২ কেজি। 

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালের ১৪ এপ্রিল গোপালগঞ্জে ভয়াবহ শিলাবৃষ্টিতে সরকারি হিসাবে ৪০ জনের প্রাণহানি ঘটে, আহত হন আরও ৪০০ জন। পরে একাধিক প্রতিবেদনে নিহত ৯২ জন বলে জানানো হয়। 

 ১৯৮৬ সালের ১৬ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী এক একটি শিলের আকার ছিল গ্রেইপফ্রুটের (জাম্বুরার মতো ফল) সমান। ৪০ জনের বেশি নিহত এবং ৪০০ জন আহত হয়েছেন। রাতের ওই শিলাবৃষ্টিতে শত শত বাড়ি, ফসলের খেত তছনছ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে এবং বিপুল পরিমাণ গাছ উপড়ে যায়। 

আজ শনিবার রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা পরিষদ চত্বরের পাশে চান্দুর মোড় এলাকায় যে শিলটি পড়েছে সেটি ৫ কেজি ওজনের বলে দাবি করছেন স্থানীয় মুদি দোকানি হালিম বিশ্বাস। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে শিলটি হাতে ধরা অবস্থায় তাঁকে বলতে শোনা গেছে, শিলটি পড়ে একটি অংশ ভেঙে গেছে। তখনই ছিল পাঁচ কেজি। যখন ভিডিওটি করা হয় ততক্ষণে এক ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। এরপরও তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি অনুভূত হচ্ছে বলে জানান হালিম বিশ্বাস। 

ছবি ও ভিডিওতে দেখে অনুমান করা যায়, আয়তাকার শিলটির দৈর্ঘ্য হতে পারে প্রায় ৮ ইঞ্চি, আর প্রস্থে এর অর্ধেক। তবে আবহাওয়া অফিস বা কৃষি বিভাগ শিলটির আকার আকৃতির বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেনি। 

এদিকে সবচেয়ে বড় ব্যাসযুক্ত শিলটি পড়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ডাকোটার ভিভিয়ানে, ২০০৩ সালের ২২ জুন। সেটির ব্যাস ছিল ৭ দশমিক ৯ ইঞ্চি বা ২০ সেন্টিমিটার। এর পরিধি পরিমাপ করা হয় ১৭ দশমিক ৬২ ইঞ্চি বা ৪৭ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার। 

বৃহত্তম পরিধির শিল পড়েছিল ২০০৩ সালের ২২ জুনে। যুক্তরাষ্ট্রের নেব্রাস্কা অঙ্গরাজ্যের অরোরায়। এর পরিধি ছিল ১৮ দশমিক ৭৪ ইঞ্চি বা ৪৭ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার। আর এর ব্যাস ছিল ৭ ইঞ্চি বা ১৭ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার। 

সবচেয়ে বেশি শিলাবৃষ্টি হয় কেনিয়ার কেরিচো এলাকায়। এখানে বছরে গড়ে ৫০ দিন শিলাবৃষ্টি হয়। এই এলাকাটি বিষুবরেখার খুব কাছাকাছি এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার ২০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত হওয়ার কারণে তাপমাত্রা খুব বেশি থাকে। কেরিচোতে এক বছরে সর্বোচ্চ ১৩২ দিন শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এটি এখন পর্যন্ত বিশ্ব রেকর্ড।

আজ ঢাকার বাতাসের কিছুটা উন্নতি, শীর্ষ দূষণের শহর বাগদাদ

৩১ প্রজাতির বন্য প্রাণী বিলুপ্ত, হারানোর পথে ৩৯০ প্রজাতি

শ্রবণস্বাস্থ্য রক্ষায় শব্দদূষণ রোধ জরুরি: পরিবেশ উপদেষ্টা

বায়ুমানের অবনতি, দূষিত শহর তালিকায় শীর্ষে ঢাকা

মার্কিন কৃষিতে রাসায়নিক সারের বিকল্প হয়ে উঠছে মানবমূত্র, বাড়ছে উৎপাদন

কমবে রাতের তাপমাত্রা, বৃষ্টি হতে পারে যেখানে

প্রথম রোজায় ঢাকার বায়ুদূষণ কমেছে, শীর্ষে ইয়াঙ্গুন

প্রথম রমজানে বৃষ্টির আভাস, আজ যেমন থাকবে আবহাওয়া

আজ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বায়ুদূষণের শহর ঢাকা, শীর্ষে উঠে এল বেইজিং

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে বিপন্নতায় মানুষ ও প্রকৃতি