শীর্ষ দশে না থাকলেও আজ ঢাকার বাতাস সংবেদনশীল মানুষের জন্য অস্বাস্থ্যকর। পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকা ছেড়েছেন লাখো মানুষ। শহর এখন ফাঁকা। এরপরও আজ বুধবার বায়ুমান নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (একিউআই) বেলা ১০টার রেকর্ড অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে বায়ুদূষণে শীর্ষে থাকা শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার অবস্থান শীর্ষ ১৩ নম্বরে। আজ বুধবার ঢাকার বায়ুমান ১১৯, যা সংবেদনশীল মানুষের জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক। অর্থাৎ শিশু, বৃদ্ধ ও শ্বাসতন্ত্রের রোগ আছে এমন মানুষের জন্য আজকের বাতাস ক্ষতিকর।
আজ বায়ুদূষণে শীর্ষে আছে ভারতের দিল্লি। শহরটির বায়ুমান ৩৩৪, যা বিপর্যয়কর বাতাসের নির্দেশক। বিশ্বজুড়ে বায়ুদূষণের দিক থেকে শীর্ষ চারে থাকা অন্য শহরগুলো হলো যথাক্রমে—নেপালের কাঠমান্ডু (২৬৪), ইরাকের বাগদাদ (১৭৭), ভিয়েতনামের হ্যানয় (১৭৬) ও ভারতের মুম্বাই(১৬৯)।
বাতাসের গুণমান সূচক (একিউআই) দিয়ে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ-এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।