কনকনে শীতে কাঁপছে উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও লালমনিরহাটের মানুষ। দিনভর দেখা মিলছে না সূর্যের। ঝরছে বৃষ্টির মতো কুয়াশা। কয়েক দিন ধরে দুই জেলার তাপমাত্রা ৮ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ওঠানামা করছে। এতে কষ্ট বেড়েছে খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষের। শীতে বেশি বিপাকে পড়েছে বয়স্ক ও শিশুরা।
পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, নববর্ষের প্রথম দিনেই কুয়াশায় ঢাকা ছিল পঞ্চগড়। কনকনে বাতাসে বাড়ছে শীতের অনুভূতি। ঝরছে বৃষ্টির মতো কুয়াশা। গতকাল বুধবার পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ তথ্য নিশ্চিত করেন তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক জিতেন্দ্র নাথ রায়।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে জেলার সর্বত্র কুয়াশার সঙ্গে বৃষ্টি ঝরতে দেখা যায়। এতে আরও শীতের প্রকোপ বেড়েছে। একসঙ্গে কুয়াশা ও বৃষ্টির জন্য পশুপাখি, শিশু, বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষ ঠান্ডায় জড়সড়। কুয়াশা, বৃষ্টি ও ঠান্ডায় যেন জনজীবন বিপর্যস্ত। রাস্তায় যানবাহন চলেছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে শ্রমজীবী মানুষদের কাজে যেতে দেখা গেছে। পঞ্চগড় সদরের তুলারডাঙ্গা এলাকার অটোচালক রাজ্জাক হোসেন বলেন, ‘ঘন কুয়াশার কারণে লোকজন ঘর থেকে বের হচ্ছে না। ফলে তেমন ভাড়াও পাচ্ছি না।’
দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, জেলায় দেখা মিলছে না সূর্যের। নতুন বছরের প্রথম দিনে দিনাজপুরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র কুয়াশা আর হিমালয় থেকে আসা হিমেল হাওয়ায় বেড়েছে শীতের প্রকোপ। এতে কষ্ট বেড়েছে খেটে খাওয়া মানুষের। বেশি বিপাকে পড়েছেন বয়স্ক ও শিশুরা।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকালে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এটি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ৯৪ শতাংশ ও বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪ কিলোমিটার। এদিকে সকালের অধিকাংশ সময় কুয়াশায় ঢেকে থাকায় দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে যানবাহনকে। প্রচণ্ড শীতে গ্রামে বসবাসরত ও নিম্ন আয়ের মানুষ চরম বিপাকে। একটু গরমের আশায় খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা অনেকের।
শহরের কলেজ মোড়ের অটোচালক শরিফুল বলেন, ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে মানুষ রাস্তায় কম চলাচল করছে। আগের মতো ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। আয় কমে গেছে।
এদিকে লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, হিমালয়ের পাদদেশের জেলা লালমনিরহাটে ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় জেঁকে বসেছে শীত। দুদিন ধরে সূর্যের দেখা না মেলায় ঠান্ডায় কাঁপছে জেলার মানুষ। গতকাল সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনভর দেখা মেলেনি সূর্যের।