দেশের সব নদ-নদী ও খাল দখল-দূষণমুক্ত করাসহ ১১ দফা দাবি জানিয়েছে দেশের ২১টি পরিবেশবাদী সংগঠন। আজ শুক্রবার আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবসে রাজধানীর সদরঘাট টার্মিনালে মানববন্ধন করেছে বাপা, বারসিক, ক্যাপস, এএলআরডিসহ ২১টি সংগঠন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে পুনর্গঠন করে হাইকোর্টের নির্দেশের আলোকে দেশের অভ্যন্তরে সব নদী-বিল-হাওর এবং জলাশয়ের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া; সব দখলদারদের তালিকা হালনাগাদ করে প্রকাশ করা এবং দখল হওয়া নদীগুলো দখলমুক্ত করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া; দখল উচ্ছেদের পর প্রত্যেকটি নদী, খাল, হাওর, ও বিলের সীমানা পানি বিজ্ঞানের আলোকে নির্ধারণ করা; তিস্তা নদীকে জীবন্ত ও আইনি সত্তা হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের ঘোষিত রায়ের বিধান মেনে চলায় সবাইকে বাধ্য করতে হবে; নদী ও অন্যান্য ভূপৃষ্ঠস্থ জলাশয়ে অপরিশোধিত পয়োনিষ্কাশন সম্পূর্ণ বন্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া; নদী থেকে অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে বালি উত্তোলন বন্ধ করা এবং বালি উত্তোলনের একটি নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়া চালু করা; দেশের সব নদ-নদী ও খাল দখল-দূষণ মুক্ত করা ও আত্মঘাতী তিস্তা মহাপরিকল্পনা বন্ধ করা ইত্যাদি।
মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে বাপার নির্বাহী সদস্য ড. হালিম দাদ খান বলেন, একাদশ শতাব্দীতে বাংলাদেশে নদীর সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় হাজার। নদীগুলো ছিল প্রশস্ত, গভীর ও পানিতে টইটুম্বুর, বর্ষাকালে প্রমত্তা। সারা বছর নাব্যতা থাকে এমন নদীর সংখ্যা এখন সর্বসাকল্যে ২৩০টি।
দখল উচ্ছেদের পর প্রত্যেকটি নদী, খাল, হাওর ও বিলের সীমানা পানি বিজ্ঞানের আলোকে নির্ধারণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
বাপার সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর কবির বলেন, সারা দেশের নদ-নদীগুলো নানা অজুহাতে দখল ও দূষণ করা হচ্ছে। এই দূষণের তালিকায় সরকারের আমলা, নেতা, নৌ-কর্মকর্তারাও জড়িত। নদী রক্ষার আইন থাকা সত্ত্বেও তা যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে নদী রক্ষা করা হচ্ছে না।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন—নোঙর ট্রাস্টের চেয়ারম্যান সুমন শামস, বাপার যুগ্ম সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম ফরিদ, বাপার নির্বাহী কমিটির সদস্য জাভেদ জাহান, গ্রীন ভয়েস কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সমন্বয়ক আরিফুর রহমান, সিডাব্লিউএফের সভাপতি শাহ্ ইশরাত আজমেরী, সিডিপির কর্মকর্তা এডওয়ার্ড এ মধু, এএলআরডির প্রতিনিধি সানজিদা খান, নবাব বাগিচা সামাজিক উন্নয়ন কল্যাণ পরিষদের সহসভাপতি মো. সেলিম, গ্রীন ভয়েস কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নাজনীন, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রতিনিধি বাবুল মিয়া, ক্যাপস প্রতিনিধি সাকিব আল হাসান ও বারসিক প্রতিনিধি হেনা আক্তার রুপা প্রমুখ।