রাজধানীর পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষার দাবিতে চলমান অবস্থান কর্মসূচির আজ ৪৩তম দিনজুড়ে গাওয়া হয়েছে গান। আজ শুক্রবার বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলন ‘পান্থকুঞ্জে গাইবে পাখি’ ব্যানারে এই সংগীত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
হাতিরঝিল ও পান্থকুঞ্জ ধ্বংস করে এফডিসি থেকে পলাশী পর্যন্ত প্রকৃতিবিধ্বংসী ও জনবিরোধী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের সংযোগ সড়ক বাতিলের দাবিতে এই সংগীতানুষ্ঠানে গান করেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী অরূপ রাহী, ব্যান্ড ট্রি ফান্ড, এ কে রাহুল, ব্যান্ড জ্যান্ত পুতুল, ব্যান্ড পান্থকুঞ্জ নোম্যাডস, কুশল বেতাল, কেপি রাজিব, মুনহামান্না, ব্যান্ড গানপোকা, রূপকল্পা, নাঈম উল হাসান, লিসান, তানভীর আনজুম ধ্রুব, ব্যান্ড সুডোস অন আ রং রুট ও দীপ রায়।
এ সময় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজিব, নাঈম উল হাসান, মাঠ পার্ক আইন পর্যালোচনাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ নিজার আলম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের আয়োজক বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজিব বলেন, ‘আমরা একটি সুস্থ ধারায় পরিবেশ আন্দোলনে চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা রাস্তা বন্ধ করতে যাইনি। আমরা অবরোধ, ভাঙচুর করিনি অথবা অনশনেও বসিনি। শান্তিপূর্ণভাবে এই পার্কে অবস্থান নিয়েছি। হামলা হওয়ার পরও জায়গাটি ছাড়িনি। সরকার আশ্বাস দিয়েছিল আমাদের সঙ্গে বসবে; কিন্তু তারা কথার বরখেলাপ করেছে। সরকার মিডিয়াসহ বিভিন্ন ব্যক্তি-গোষ্ঠীকে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। যেটা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের কর্মকাণ্ডের চেয়েও ভয়ংকর।’
আমিরুল রাজিব আরও বলেন, ‘আমি আশা করব তাঁরা পথে নেমে আসবেন, পথের মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। ঢাকার যে জনপরিসর, সেটা বাঁচানোর জন্য যে আন্দোলন, তা আমরা সুস্থ ধারার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে করে যাব। মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে সেটা করে যাব। কাউকে কোনো চাপ প্রয়োগ, বাধা দেওয়া কিংবা নিন্দা করতে চাই না। এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাব এবং নিশ্চিত যে আমরা এই পার্ক উদ্ধার করব। যতক্ষণ না এটি উদ্ধার হয়, আমরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছি না।’
আমিরুল রাজিব আরও দাবি করেন, প্রকল্পের কারণে যেসব সাধারণ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে, তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে সরকারের।
বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নাঈম উল হাসান বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে গ্রহণ করা পরিবেশবিধ্বংসী ও জনবিরোধী প্রকল্প কীভাবে এই জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকার আবার চালু করেছে, তা বোধগম্য নয়। গুটিকয়েক ব্যক্তিগত গাড়ি চলার জন্য পান্থকুঞ্জের মতো একটি জনপরিসর ধ্বংস করা হলো। পুরো রাস্তার নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে হাতিরপুল, কাটাবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটসহ কাঁঠালবাগান ও সেন্ট্রাল রোডের বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত হবে। আমরা আশা করব, আমাদের অভ্যুত্থানের সরকার জনগণের কথা শুনবে এবং প্রকল্পের এই সংযোগ সড়কের কাজ বাতিল করবে।’
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা হাতিরঝিল ও পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষায় বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে পান্থকুঞ্জ পার্ক ও হাতিরঝিল রক্ষায় গণস্বাক্ষর নেওয়া হয়।