সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকে এক আলোচিত ট্রেন্ড ‘টেন আননৌন ফ্যাক্টস অ্যাবাউট বিএমডব্লিউ (Ten Unknown Facts About #BMW)’। এই বাক্য দিয়ে ফেসবুকে সার্চ করলেই পাওয়া যাবে বিভিন্ন বিষয়ে শত শত পোস্ট। এসব পোস্টের ক্যাপশনে ‘টেন আননৌন ফ্যাক্টস অ্যাবাউট বিএমডব্লিউ’ শিরোনামে জার্মানির বিখ্যাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বিএমডব্লিউয়ের যাত্রা শুরুর ইতিহাস, ব্র্যান্ড পোর্টফলিও, বৈশ্বিক উৎপাদনসহ বিভিন্ন বিষয়ে দশটি তথ্য তুলে ধরা হয়। কিন্তু ক্যাপশনের সঙ্গে পোস্টের বিষয়বস্তুর মিল পাওয়া যায় না। ফেসবুকে খুঁজে অন্তত ২০১৫ সাল থেকে এমন ট্রেন্ড চালুর তথ্য পাওয়া যায়।
সাম্প্রতিক সময়ে এই ট্রেন্ড কীভাবে আবার নতুন করে চালু হলো সে সম্পর্কে জানা যায়নি। তবে অন্তত গত আগস্ট থেকে বিশ্বব্যাপী এই ট্রেন্ড জনপ্রিয় হতে দেখা যায়। বাংলাদেশেও ব্যতিক্রম নয়। তবে দেশে এই ট্রেন্ডের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে ছড়ানো হচ্ছে গুজব। আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ জনপ্রিয় এই হ্যাশট্যাগের আড়ালে চিত্রনায়ক জায়েদ খানের নামে সংবাদমাধ্যমের লোগো সংবলিত ভুয়া ফটোকার্ড ব্যবহার করে ও একই প্রক্রিয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের নামে গুজব ছড়াতে দেখেছে।
এত দিন ডিবি হারুনের ভয়ে কিছু বলিনি, অপু বিশ্বাসের ছেলে জয় আমার সন্তান: চিত্রনায়ক জায়েদ খান
চিত্রনায়ক জায়েদ খানের বক্তব্য দাবিতে ‘বিডি নিউজ টাইমস’ নামের একটি ফেসবুক পেজে বেসরকারি সম্প্রচার মাধ্যম যমুনা টিভির একটি ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ৬টায় দেওয়া পোস্টটিতে আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ৫০ হাজার রিয়েকশন পড়েছে। পোস্টটি শেয়ার হয়েছে ৬০০–এর বেশি। ফটোকার্ডটিতে প্রকাশের তারিখ দেওয়া ৯ সেপ্টেম্বর।
যমুনা টিভির লোগো ও ডিজাইন সংবলিত ফটোকার্ডটির সত্যতা যাচাইয়ে সংবাদমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এমন কোনো ফটোকার্ড পাওয়া যায়নি। যমুনা টিভি ছাড়া অন্য কোনো সংবাদমাধ্যমেও জায়েদ খানের এমন বক্তব্যের অস্তিত্ব নেই। জায়েদ খানের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও সাম্প্রতিক সময়ে এমন কোনো পোস্ট পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ফটোকার্ডটিতে জায়েদ খানের নামের বানান লেখা হয়েছে— যায়েদ খান।
ফটোকার্ডটি ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এতে ‘দেবদাস’ নামে একটি জলছাপ রয়েছে। এই জলছাপের সূত্রে ‘দেবদাস’ নামের একটি পেজে যমুনা টিভির কথিত ফটোকার্ডটি পাওয়া যায়। গত সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) পেজটিতে ফটোকার্ডটি পোস্ট করা হয়। পেজটি ঘুরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের লোগো ও ডিজাইন নকল করে ভুয়া ফটোকার্ড বানিয়ে নায়িকা অপু বিশ্বাস এবং তাঁর সঙ্গে জায়েদ খানকে জড়িয়ে একাধিক নেতিবাচক তথ্য প্রচার করতে দেখা যায়।
অনুসন্ধানে প্রাপ্ত ফলাফল থেকে নিশ্চিত, অপু বিশ্বাসের ছেলে জয়কে নিয়ে জায়েদ খানের নামে ভাইরাল ফটোকার্ডটিও ভুয়া।
মাজারে টাকা না দিয়ে, ক্ষুধার্তকে খাবার কিনে দিন: ড. ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর এক মাস পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এখনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। এই সুযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাজারে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের বক্তব্য দাবিতে একটি ফটোকার্ড ভাইরাল হয়েছে। সেখানেও ক্যাপশনে ‘টেন আননৌন ফ্যাক্টস অ্যাবাউট #বিএমডব্লিউ’ লেখা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) মুহাম্মদ ইব্রাহিম নামের একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে কার্ডটি পোস্ট করা হয়। কার্ডটিতে ড. ইউনূসের নাম ও ছবি ব্যবহার করে কিছু বক্তব্য জুড়ে দেওয়া হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, ড. ইউনূস বলেছেন, ‘মাজারে টাকা না দিয়ে ক্ষুধার্তকে খাবার কিনে দিন। পীরকে বাবা না বানিয়ে নিজের বাবার যত্ন নিন। পীরের দরগায় সেজদা না দিয়ে মসজিদে সেজদা দিন।’
প্রাসঙ্গিক কি–ওয়ার্ড অনুসন্ধানে মাজার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের এমন কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। স্বভাবতই ড. ইউনূস এমন কোনো মন্তব্য করলে সেটি সংবাদমাধ্যমে প্রচার হতো।