Ajker Patrika
হোম > ফ্যাক্টচেক

সিরিয়ার কারাগার নিয়ে ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি

অনলাইন ডেস্ক

সিরিয়ার কারাগার নিয়ে ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি
বন্দীদের খোঁজে সেদনায়া কারাগারে ভিড় করা স্বজনেরা। ছবি: ডয়েচে ভেলে

সিরিয়ার কুখ্যাত সেদনায়া কারাগার থেকে হাজার হাজার বন্দী মুক্তি পাওয়ার পর, তাদের ছবি ও ভিডিও বলে দাবিকৃত অনেক কনটেন্ট ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। জার্মান-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে এ ধরনের কিছু ভাইরাল দাবির সত্যতা যাচাই করেছে।

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে বিদ্রোহীরা ক্ষমতা দখল করার পর, তারা সেদনায়া কারাগারের বন্দীদের মুক্ত করে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, ‘মানব কসাইখানা’ হিসেবে পরিচিত এই কারাগারে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনামলে হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে নিয়মিত নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

মানবাধিকার কর্মী ও সাবেক বন্দী ওমর আলশোগরে ডয়েচে ভেলেকে জানিয়েছেন, বাশারের পতনের আগে কাগজে-কলমে সিরিয়ায় বন্দীর সংখ্যা ছিল প্রায় ১ লাখ ৩৯ হাজার। তবে পতনের পর কারাগারগুলো থেকে ২ লাখের বেশি বন্দী মুক্তি পেয়েছে বলে ধারণা করেন ওমর।

মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের ইব্রাহিম আল-আসিল বলেছেন, ‘দশক ধরে লাখ লাখ মানুষ বন্দী ও নির্যাতিত হয়েছে। প্রায় প্রতিটি সিরীয় পরিবার তাদের কোনো সদস্য বা পরিচিতজনকে হারিয়েছে বা কেউ নিখোঁজ হয়েছেন, যাদের কোনো খবর আর পাওয়া যায়নি।’

এ অবস্থায় বন্দীদের নিয়ে তথ্য খুঁজতে গিয়ে অনেকেই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। তবে ডয়েচে ভেলের ফ্যাক্টচেক দল এসব দাবির সত্যতা খতিয়ে দেখেছে। যেমন—

এআই-জেনারেটেড ছবি সেদনায়ার বন্দী বলে প্রচার

image-1

দাবি: এটি সেদনায়া কারাগারের এক বন্দী। এত দিন মাটির নিচে আটকা ছিলেন তিনি। তাঁর মুখ দেখে বোঝা যায় সে অবাক হয়েছে।

ডয়েচে ভেলে ফ্যাক্টচেক: দাবিটি মিথ্যা।

এই ছবি সেদনায়া কারাগারের বন্দীর নয়। রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা যায়, এটি একটি ৫-সেকেন্ডের ভিডিও থেকে নেওয়া। ভিডিওটি ২০২৪ সালের ৩ ডিসেম্বর টিকটকে প্রকাশিত হয় এবং নির্মাতা এটিকে এআই-জেনারেটেড বলে উল্লেখ করেছেন।

ভিয়েতনামের জাদুঘরের ছবি ব্যবহার

দাবি: দীর্ঘ চুলওয়ালা, শিকলে বাঁধা একজন মানুষকে সেদনায়া কারাগারের বন্দী হিসেবে দেখানো হয়েছে।

ডয়েচে ভেলে ফ্যাক্টচেক: দাবিটি মিথ্যা।

ছবিটি ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটির ওয়ার রেমন্যান্টস মিউজিয়ামে থাকা একটি মোমের মূর্তির। রিভার্স ইমেজ সার্চে এটি ২০০৮ সালের আলামি ফটো আর্কাইভে পাওয়া যায়।

একটি শিশুর ভিডিওকে সেদনায়ার দাবি

দাবি: সেদনায়া কারাগারের ভূগর্ভস্থ সেলে আটকে থাকা এক শিশুকে দেখানো হয়েছে।

ডয়েচে ভেলে ফ্যাক্টচেক: মিথ্যা।

ভিডিওটি সেদনায়া কারাগারের নয়। এটি একটি শিশুর বাড়িতে খেলার ভিডিও, যা টিকটকে আপলোড করা হয়েছিল। ভিডিওটি বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন দাবি নিয়ে প্রচারিত হয়েছে।

ডয়েচে ভেলে মত দিয়েছে, সেদনায়া কারাগার নিয়ে ভুয়া তথ্য ও ছবি ছড়ানোর ফলে প্রকৃত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত ও ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে। এসব মিথ্যা তথ্যের কারণে সত্যিকারের নির্যাতন ও অপরাধের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা factcheck@ajkerpatrika.com

দুই নারীর ব্যাগ থেকে লাশ উদ্ধারের দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, ভারতের

ঢাকায় আউটসোর্সিং কর্মচারীদের বিক্ষোভকে আ.লীগের প্রকাশ্য মিছিল বলে প্রচার

দেশে ডাকাতির ভিডিওর দাবিতে ছড়াল ইন্দোনেশিয়ার ভিডিও

ঢাকার রাস্তায় ধর্ষণের দৃশ্য দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি ভারতের

ট্রাম্পের গাড়িবহরকে আইসিসির শুনানিতে শেখ হাসিনার লবিস্টদের বহর দাবিতে প্রচার

ভারতের ঘটনাকে ঢাকার নবাবপুরে স্বর্ণকারের দোকানে ডাকাতি বলে প্রচার

কফি পানে মানুষের শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়— প্রচলিত ধারণাটি কি বিজ্ঞানসম্মত

ভারতীয় অভিনেত্রীর উন্মুক্ত বক্ষের দৃশ্যকে বাংলাদেশি তরুণীর ধর্ষণবিরোধী প্রতিবাদ বলে প্রচার

‘তরুণীকে ১৮ জন মিলে ধর্ষণ ও হত্যা’ দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি পুরোনো

শহীদ মিনারে প্রবেশে মির্জা ফখরুলকে বাধা—ভাইরাল ছবিটির সত্যতা জানুন