ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
‘স্নাতক পাস ছাড়া এখন থেকে আর কেউ সাংবাদিক হতে পারবে না’– এমন একটি বক্তব্য গত দু’দিনে বেশ কয়েকজন ফেসবুক ব্যবহারকারীকে পোস্ট করতে দেখা গেছে। পোস্টগুলোতে দাবি করা হয়েছে, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক মো. শাহ আলমগীর এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
ফ্যাক্টচেক
পোস্টগুলো দেখে মনে হচ্ছে, স্নাতক ছাড়া কেউ সাংবাদিক হতে পারবেন না, এ রকম সিদ্ধান্ত সম্প্রতি নেওয়া হয়েছে। পিআইবির মহাপরিচালক মো. শাহ আলমগীর এমন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন বলে পোস্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে। তবে পিআইবির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, মহাপরিচালক হিসেবে মো. শাহ আলমগীরের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। পিআইবির বর্তমান মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ। ২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল দায়িত্ব নেন তিনি।
যে তথ্যটি ছড়ানো হচ্ছে তা ২০১৭ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বেশ কিছু গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছিল। প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মাদারীপুরে স্থানীয় সাংবাদিকদের দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পিআইবির তৎকালীন মহাপরিচালক মো. শাহ আলমগীর বলেন, ‘স্নাতক ডিগ্রি অর্থাৎ বিএ পাস ছাড়া নতুন কেউ সাংবাদিক হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে পারবেন না। তবে, যারা এরই মধ্যে সাংবাদিকতায় ১২ বছর অতিবাহিত করেছেন তাঁদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিলযোগ্য।’
এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকার সঙ্গে ফোনালাপে পিআইবির বর্তমান মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেন, ‘স্নাতক ডিগ্রি সাংবাদিকতার জন্য একমাত্র মানদণ্ড হতে পারে না। এটা গুরুমুখি পেশা এবং চর্চার বিষয়। যে কোনো পেশায় শিক্ষার একটা গুণ তো আছেই, তবে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এটাকে নির্ধারণ করে দেওয়া যায় না। এমনও হতে পারে, একজন ব্যক্তি পিএইচডি করেছেন, কিন্তু তাঁকে দিয়ে ভালো সাংবাদিকতা হবে না। স্নাতক পাসের যে বক্তব্যের কথা বলা হচ্ছে, সেটা আমরা নানাভাবে নানা সময় বলি। তবে এটা কোনো সিদ্ধান্ত না, সাংবাদিকতার গুণগত মান বাড়ানোর তাগিদ দেওয়ার জন্য আমরা বলে থাকি।’
পিআইবির তালিকভুক্ত হতে কোনো ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারিত নেই। তবে মো. শাহ আলমগীর মহাপরিচালক থাকা কালে ন্যূনতম যোগ্যতা (স্নাতক) নির্ধারণের একটি প্রস্তাব রেখেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। আর বর্তমান মহাপরিচালক বলছেন, সাংবাদিকদের জন্য ন্যূনতম স্নাতক পাস হওয়ার কথা তাঁরা বলেন। এটি কোনো সিদ্ধান্ত নয় বরং সাংবাদিকতার গুণগত মান বাড়ানোর তাগিদ।