সম্প্রতি ফেসবুকে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যকার সংঘর্ষের তথ্যের সঙ্গে একটি ছবি প্রচার করা হচ্ছে। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, কয়েকজন অস্ত্রধারী ব্যক্তি পুলিশের সামনে অস্ত্র হাতে সংঘর্ষে লিপ্ত।
ফেসবুকে শেয়ার করা এ ছবিতে লোগো আকারে ‘নবদূত’ লেখা রয়েছে। ছবির নিচের অংশে ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সংঘর্ষের ঘটনাটি সংবাদ প্রতিবেদন আকারে বর্ণনা করা হয়েছে।
ফেসবুকে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দেখা গেছে, অসংখ্য গ্রুপ, পেজ ও আইডিতে ছবিটি একই তথ্যসহ পোস্ট করা হয়েছে।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ প্রযুক্তির মাধ্যমে অনুসন্ধান করলে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ছবি। ২০১৫ সালের ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর ‘বাংলা টেলিগ্রাফ’ নামের একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ছবিটি পাওয়া যায়।
২০১৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে সম্প্রতি ভাইরাল ছবিটির সাদা-কালো ভার্সন খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনে আগের দিন বাংলা টেলিগ্রাফে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেওয়া তথ্যের মিল পাওয়া যায়।
কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধান করে প্রথম আলো, বিডিনিউজসহ বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে এসংক্রান্ত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনগুলোতে সাম্প্রতিক ভাইরাল ছবিটি পাওয়া না গেলেও ব্যবহৃত অন্যান্য ছবি ও ভিডিওতে একই পোশাক পরা এবং একই ধরনের সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া ব্যক্তিদের দেখা যায়।
ভাইরাল হওয়া ছবির সঙ্গে ‘নবদূত’ নামের একটি লোগো ব্যবহার করে হয়েছে। ফেসবুকে অনুসন্ধান করে ‘নবদূত নিউজ’ নামের একটি ফেসবুক পেজ পাওয়া যায়। ওই পেজে একই ডিজাইনের আরও ছবি দেখা গেছে। তবে সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৪ জানুয়ারি ওই পেজ থেকেই ছবিটি পোস্ট করা হয়। পরে সেটি মুছে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে গত ৪ জানুয়ারি ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদ্দীন হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। সমাবেশের জায়গা দখল নিয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় মীমাংসা করতে গিয়ে আহত হন ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
সিদ্ধান্ত
ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক দুই পক্ষের সংঘর্ষের খবরের সঙ্গে ২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যকার সংঘর্ষের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে, তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা—factcheck@ajkerpatrika.com