ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
প্রতিবেদনগুলোতে একটি কোলাজ ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। ফ্যাক্টচেকে দেখা গেছে, ছবিতে চিত্রনায়িকা পরীমণির পাশে যাকে ‘মডেল রথি’ বলে দাবি করা হচ্ছে, তিনি ভিন্ন ব্যক্তি। তবে তাঁর নামও রথি।
আজকের নিউজ, নিউজ অনলাইন ডটকমসহ বেশ কিছু অনলাইন পোর্টালে প্রতিবেদনের সঙ্গে ছবিটি ব্যবহার করতে দেখা গেছে। ফেসবুকেও একই তথ্য দিয়ে ছবিটি কেউ কেউ পোস্ট করেছেন।
প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে দাবি করা হয়েছে, মডেল রথি ছিলেন বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন এনটিভির রিয়্যালিটি শো মার্কস অলরাউন্ডার-এর চ্যাম্পিয়ন।
কিন্তু প্রতিবেদনে মডেল রথি দাবি করে যে ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে তা মূলত রথি আহমেদ মিকির, তিনি মার্কস অলরাউন্ডার প্রতিযোগিতায় অংশ নেননি। তাঁর ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম আইডি ঘেঁটে দেখা গেছে, তিনি নিজেকে ‘সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার’ এবং ‘হিজাবিজ অ্যান্ড বিউটি বিজ’ নামের একটি বিউটি ব্লগ পেজের অ্যাডমিন বলে পরিচয় দিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা তাঁর সব ছবিতে তাঁকে হিজাব পরিহিত দেখা যাচ্ছে।
এনটিভির মার্কস অলরাউন্ডার চ্যাম্পিয়ন ও মডেল রথি পরিচয়ে অনলাইন পোর্টাল ও ফেসবুকে নিজের ছবি ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি স্পষ্ট করতে একাধিক গণমাধ্যমে বক্তব্য দেন রথি আহমেদ মিকি। তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু পত্রিকায় রথি নামটি ব্যবহার করে সেখানে আমার ছবি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আমার জন্য বেশ বিরক্তিকর ও বিব্রতকর।’ কেবল নামের মিল দেখে যাচাই না করেই ছবি প্রকাশ করে তাঁর সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
প্রতিবেদনগুলোতে তুহিন সিদ্দিকী অমি নামের যে ব্যক্তির কথা লেখা হয়েছে, তিনি পরীমণিকে ধর্ষণ চেষ্টা ও হত্যা চেষ্টার মামলায় গত ১৪ জুন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। গত ২৯ জুন ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহজাদী তাহমিদা তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন।
গত ৮ জুন গভীর রাতে মিরপুরের বেড়িবাঁধে ঢাকা বোট ক্লাবে গেলে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করেন পরীমণি। প্রথমে ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এবং পরে সংবাদ সম্মেলন ডেকে ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি।
তবে, এ প্রতিবেদনে দুবাইয়ের যে ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, সেটির সপক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য তথ্য সূত্র উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়া, বিচারাধীন কোনো বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ ও তথ্য উৎস উল্লেখ ছাড়া প্রতিবেদন প্রকাশও সাংবাদিকতার মৌলিক নীতিবিরুদ্ধ।
পরীমণির সঙ্গে মডেল রথিকে জড়িয়ে বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো বিভ্রান্তিকর। দুবাইয়ে কবে কীভাবে ‘মডেল রথির’ সঙ্গে পরীমণির সাক্ষাৎ হয়েছে প্রতিবেদনে সেটি স্পষ্ট করা হয়নি। তাছাড়া ছবিতে মার্কস অলরাউন্ডার চ্যাম্পিয়ন ‘মডেল রথি’ নাম দিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে ‘রথি’ ডাকনামের অন্য এক নারীর ছবি।