ফেসবুক ও ইউটিউবে একটি ভিডিও পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হচ্ছে ‘পুলিশের গালে চড় লাগিয়ে দিল, কে এই সাহসী চাচা। লকডাউনের বিরুদ্ধে আন্দোলন ক্ষেপে উঠেছে জনগণ’। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েকজন মানুষ স্লোগান দিচ্ছেন, পুলিশ তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাঁরা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করছেন।
ফেসবুকে শতাধিক পেজ ও গ্রুপে একই ক্যাপশন দিয়ে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে। লক্ষাধিক মানুষ ভিডিওটি দেখেছেন। শিরোনামে বিভ্রান্ত হয়েছেন বলে মন্তব্যের ঘরে জানিয়েছেন বহু দর্শক। ইউটিউবে বাংলার টক শো নামে একটি চ্যানেলে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ ভিডিওটি দেখেছেন।
ভিডিও বিশ্লেষণ
একেক প্ল্যাটফর্মে ভিডিওর দৈর্ঘ্য একেক রকম। তবে ১২ মিনিট ৪১ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের ভিডিওটিই বেশি প্রচার পেয়েছে। কোনো কোনো পেজে এটি লাইভ ভিডিও হিসেবেও সম্প্রচারিত হয়েছে। ভিডিওটি দেখে নিশ্চিত হওয়া যায়, এটি একক কোনো ভিডিও নয়। দুটি আলাদা ভিডিও যুক্ত করা হয়েছে।
ভিডিওটিতে ২ মিনিট ২৪ সেকেন্ড পরই জুড়ে দেওয়া হয়েছে আলাদা একটি ক্লিপ। এখানে পুলিশের ব্যারিকেড এবং বেশ বড় একটি মিছিল দেখা যায়। পুরো ভিডিওতে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া দেখা গেলেও ক্যাপশনে উল্লেখ করা পুলিশের গালে চড় মারার মতো কোনো ঘটনা ভিডিওতে নেই।
ভিডিওটির প্রথম অংশটি পুরানা পল্টন মোড়ে সচিবালয়ের সামনে ধারণ করা। দ্বিতীয় অংশটিও আশপাশের এলাকায়ই ধারণ করা।
ফ্যাক্টচেক
১। ভিডিওটিতে কোথাও পুলিশের গায়ে হাত তোলার মতো দৃশ্য নেই। ভিডিওতে যে বয়স্ক লোকটিকে দেখা যাচ্ছে, পুরো ভিডিওর কোথাও পুলিশের গায়ে তাঁকে হাত তুলতে এমনকি মারতে উদ্যত হতেও দেখা যায়নি।
২। ফেসবুকে ভিডিওর ক্যাপশনে বা ইউটিউবে শিরোনামে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি লকডাউনের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের বিক্ষোভ। কিন্তু ভিডিওতে দেখানো আন্দোলনের দৃশ্যগুলো রিভার্স সার্চের মাধ্যমে জানা যায়, ভিডিওটি কিছুদিন আগের।
আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত এ সম্পর্কিত প্রতিবেদন পড়ুন এখানে। ওইদিন অনলাইন গণমাধ্যম ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত ২৭ জুনের ভিডিওটি দেখে এ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।
সিদ্ধান্ত
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে ক্যাপশনটি বিভ্রান্তিকর। ভিডিওটি লকডাউনের নয়, ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের সরকারি নির্দেশের প্রতিবাদে রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচির।