উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ‘একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষে স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ’ করা হয়েছে—এমন তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘ব্রেকিং নিউজ’ আকারে ভাইরাল হয়েছে। ‘বাংলাদেশ শিক্ষা সংবাদ’ নামের ১১৬ হাজার ফলোয়ারের পেজ থেকে গতকাল মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা ১৪মিনিটে দেওয়া একটি পোস্ট সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। তবে এতে কোনো সূত্র উল্লেখ করা হয়নি। শিক্ষামূলক অন্যান্য পেজেও তথ্যটি প্রচার হতে দেখা গেছে। কোনো কোনো পেজে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কেও সূত্র হিসেবে ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বোর্ড, ঢাকার ওয়েবসাইটের নোটিশ বোর্ড থেকেও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা নিয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
পরে তথ্যটির সূত্রপাত অনুসন্ধানে দেখা যায়, উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করার তথ্যটি ২০২৩ সালেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়েছিল। সে সময় তথ্যটির সূত্র হিসেবে দেশীয় মূলধারার একটি অনলাইন পোর্টালের প্রতিবেদন ব্যবহার করতে দেখেছে আজকের পত্রিকা ফ্যাক্টচেক বিভাগ। প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল, ‘একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ।’
প্রতিবেদনটির বিস্তারিত অংশ থেকে জানা যায়, ‘বরগুনা সরকারি কলেজে ক্লাস চলাকালীন শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে কলেজে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে। বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরের দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মতিউর রহমান স্বাক্ষরিত নিষিদ্ধকরণের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।’
পরে বরগুনা সরকারি কলেজের ফেসবুক পেজে ২২ নভেম্বরে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিটিও খুঁজে পাওয়া যায়।
উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষে স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করার ঘোষণাটি সরকার বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো ঘোষণা নয় এবং এটি পুরো দেশের শিক্ষার্থীদের জন্যও প্রযোজ্য নয়। বরং ২০২৩ সালে বরগুনা সরকারি কলেজে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষে স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করে একটি বিজ্ঞপ্তি দেয় কলেজটির কর্তৃপক্ষ। ওই বিজ্ঞপ্তি প্রসঙ্গে প্রতিবেদন প্রকাশ করে দেশীয় মূলধারার একটি অনলাইন পোর্টাল। পরে প্রতিবেদনটির শিরোনামটিই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রে ভাইরাল হয়ে যায়।