নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
এশিয়ার কয়েকটি দেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) শনাক্ত হয়েছে। কোনো কোনো অঞ্চলে ভাইরাসটির জন্য উদ্বেগজনক পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।
আজ রোববার বাংলাদেশে একজনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্তের কথা জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ভাইরাসটির সংক্রমণ প্রতিরোধে সাতটি সচেতনতামূলক নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নির্দেশনায় স্বাক্ষর করেছেন অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. মো. হালিমুর রশিদ।
তিনি আজ সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা সতর্কতার জন্য কিছু বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছি। একই সঙ্গে ভাইরাসটি প্রতিরোধে সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিভিল সার্জন, জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা, দেশের সব বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও সব বন্দর স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’
নির্দেশনাগুলো হলো শীতকালীন শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য মাস্ক ব্যবহার করা, হাঁচি বা কাশির সময় বাহু বা টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখা, ব্যবহৃত টিস্যু ঢাকনাযুক্ত ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার অথবা সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা ও কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখা, ঘন ঘন সাবান ও পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া (অন্তত ২০ সেকেন্ড), অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, মুখ না ধরা এবং জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নোটিশে বলা হয়েছে, চীনসহ উপমহাদেশে বিভিন্ন দেশে এইচএমপিভি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এবং ভাইরাসের তীব্রতা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। বিশেষ করে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু ও ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে এ রোগের সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। সেই সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন, হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, গর্ভবতী নারী ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য উচ্চ ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে।
আরও বলা হয়েছে, পৃথিবীর অন্যান্য বহু দেশের মতো বাংলাদেশেও এই রোগের সংক্রমণ দেখা যায়। সম্প্রতি চীন ও অন্যান্য দেশে এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় বাংলাদেশর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা আবশ্যক।
যার জন্য সব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র এবং পয়েন্টস অব এন্ট্রিসমূহে স্বাস্থ্যবিধি জোরদার করা প্রয়োজন। প্রয়োজনে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস অন্যান্য শ্বাসতন্ত্রের রোগের মতো ফ্লুয়ের মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। যা সাধারণত দুই-পাঁচ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তাই আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নাই। সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হলো।