হোম > স্বাস্থ্য

অল্প বয়সীদের ডায়াবেটিস কেন হয়, জেনে নিন

ডা. প্রদীপ্ত চৌধুরী

ডায়াবেটিস বয়স্কদের রোগ, এই তথ্য এখন মূল্যহীন। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রযুক্তির উন্নতির ফলে এখন অল্প বয়সীদেরও ডায়াবেটিস রোগ শনাক্তের হার বাড়ছে।

অল্প বয়সী কারা

সাধারণত শৈশব পার হওয়া কিশোর-কিশোরী থেকে যুবক-যুবতী এই বয়সের অন্তর্ভুক্ত। দেশ বা অঞ্চলভেদে যে বয়সটা ভিন্ন হতে পারে। ১০ বছরের নিচে যারা, তাদের ডায়াবেটিস অধিকাংশ ক্ষেত্রে টাইপ-১। ৩৪ বছরের বেশি বয়সীদের ডায়াবেটিস প্রধানত টাইপ-২। কিন্তু এই ১০-৩৪ বছরের মাঝের সময়টা নিয়ে এর আগে গবেষণা কম হয়েছে। তাই এই সময়ে ডায়াবেটিস হলে সেটা সাধারণত যেকোনো ধরনের হয়, তার চিকিৎসা কী—এসব নিয়ে তথ্য কম রয়েছে এখনো।

অল্প বয়সীদের ডায়াবেটিস কেন হয়

একাধিক কারণ অল্প বয়সীদের একসঙ্গে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। যেমন অতিরিক্ত ওজন, শারীরিক শ্রমের অভাব শরীরে ইনসুলিনের স্বাভাবিক কাজে বাধা সৃষ্টি করে, তাতে গ্লুকোজ বাড়ে শরীরে। মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে গর্ভের শিশুর ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস হওয়ার উচ্চ ঝুঁকি থাকে। এ ছাড়া বয়ঃসন্ধিতে শরীরে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমে যায়। এর সম্মিলিত ফল হিসেবে এই বয়সে ডায়াবেটিস হতে পারে।

বড়দের ডায়াবেটিস থেকে পার্থক্য কিসে

বর্তমানের বিভিন্ন গবেষণায় এটা স্পষ্ট যে ছোটদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস বড়দের টাইপ-২ ডায়াবেটিসের একটা তীব্র ধরন। সাধারণত ইনসুলিন নামক হরমোনটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমায়। এই হরমোন ঠিকমতো কাজ না করতে পারায় এবং শরীরে এই হরমোনের মাত্রা কমে গেলে সাধারণত ডায়াবেটিস হয়। অল্প বয়সীদের ডায়াবেটিসে এই দুই সমস্যাই প্রকট আকারে দেখা যায়। ফলে অল্প বয়সীদের ডায়াবেটিসে রক্তনালিজনিত জটিলতা, যেমন হৃদ্‌রোগ কিংবা স্ট্রোকের আশঙ্কা অনেক বেশি।

উন্নত বিশ্ব বনাম বাংলাদেশ

উন্নত বিশ্বে আগে ধারণা করা হতো, অল্প বয়সীদের ডায়াবেটিস মানেই টাইপ-১, যেটা সরাসরি ইনসুলিনের অভাবে হয়। তবে সেখানেও এখন দেখা যাচ্ছে, টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সংখ্যা বাড়ছে। যদিও আমাদের দেশে এখনো তেমন কোনো সমীক্ষা হয়নি। তারপরও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশে অল্প বয়সীদের ডায়াবেটিস প্রধানত টাইপ-২। আর এই শ্রেণিবিভাগের গুরুত্ব হচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধযোগ্য।

চিকিৎসায় পার্থক্য কী

অল্প বয়সীদের জীবনের দৈর্ঘ বেশি বলে চিকিৎসকেরা চেষ্টা করে হাইপোগ্লাইসেমিয়া না করে রক্তের গ্লুকোজ যথাসম্ভব কম রাখার। যাতে ভবিষ্যতে তাদের জটিলতার আশঙ্কা কমানো যায়। এ ছাড়া কঠোরভাবে জীবনযাপনের নিয়মনীতি মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। সাধারণত এই বয়সীরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য সহজে মেনে নিতে চায়। তাই ওষুধের পাশাপাশি তাদের মানসিক সহায়তার প্রয়োজন হয়।

প্রতিরোধ, নাকি প্রতিকার

প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভালো। শিল্পায়নের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে জীবনধারায়। যার খারাপ প্রভাব পড়েছে শিশু-কিশোরদের ওপর। তাদের কমেছে খেলার জায়গা, বেড়েছে গৃহবন্দী জীবন। সঙ্গে রয়েছে ফাস্ট ফুডের সহজলভ্যতা। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে এই চক্র ভাঙতে হবে। খাওয়াদাওয়ায় বাড়াতে হবে শাকসবজি, মৌসুমি ফলমূলের পরিমাণ, কমাতে হবে শর্করা, অতিরিক্ত ভাজাপোড়া এবং প্রক্রিয়া করা খাবার। আমাদের শিশু-কিশোরদের মাঠে মুক্ত বাতাসে খেলার সুযোগ করে দিতে হবে, উৎসাহ দিতে হবে। সর্বোপরি তাদের স্বাস্থ্যকর, সুস্থ জীবনযাপনই পারবে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি রুখে দিয়ে নীরোগ ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে।

লেখক: ডা. প্রদীপ্ত চৌধুরী, এমবিবিএস, বিসিএস (স্বাস্থ্য), রেসিডেন্ট, বিএসএমএমইউ

ব্যথার ওষুধের বিকল্প ভাবা হয় লবঙ্গকে

গর্ভাবস্থায় মেথি খাওয়া যায়

কাঁধ নাড়াচাড়া করতে না পারলে

শীতকালে পানিশূন্যতায় স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং প্রতিকার

চোখের সমস্যা থেকে মাথাব্যথা হতে পারে

নিয়মিত চা পানকারীরা কেন দীর্ঘায়ু হন, জানালেন বিজ্ঞানীরা

এইচএমপিভিতে মহামারির আশঙ্কা কম, অভিমত বিএসএমএমইউর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের

দেশে এইচএমপিভিতে আক্রান্ত একমাত্র রোগীর মৃত্যু

এইচএমপিভি ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা

দেশে এইচএমপিভি ভাইরাস শনাক্ত, আক্রান্ত একজন নারী

সেকশন