ডা. মো. আরমান হোসেন রনি
এখন বসন্তকাল। এ সময় বাতাস শুষ্ক থাকে, তাপমাত্রায় আসে পরিবর্তন। বাতাসে ভেসে বেড়ানো ফুলের রেণু সৃষ্টি করে অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস নামে চোখের রোগ। সাধারণভাবে কনজাংটিভা বা চোখের সাদা অংশ আবৃত স্বচ্ছ ঝিল্লির প্রদাহকে কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠা বলে। আর তা যদি হয় কোনো অ্যালার্জির কারণে, তখন তাকে বলা হয় অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস। যেসব উপাদান অ্যালার্জি তৈরি করে, এরা অ্যালার্জেন হিসেবে পরিচিত।
অ্যালার্জেনের তালিকা
» পরাগরেণু
» ধুলাবালি
» প্রসাধনী, যেমন কাজল, আই লাইনার, মাসকারা ইত্যাদি
» বায়ুদূষণ
» ধূমপান
» দীর্ঘ সময়ের জন্য ব্যবহৃত চোখের ড্রপ
প্রকারভেদ
» সিজনাল অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস: মূলত বসন্তকালে এ ধরনের কনজাংটিভাইটিস হয়ে থাকে।
» ভার্নাল কেরাটো কনজাংটিভাইটিস: শিশুদের মধ্যে বেশি হয়।
» জায়ান্ট প্যাপিলারি কনজাংটিভাইটিস: দৈনিক কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারকারীদের মধ্যে বেশি হয়।
» চোখ লাল হয়ে পানি পড়া।
» চোখে প্রচণ্ড চুলকানি হওয়া।
» আলো সহ্য করতে না পারা।
» ঘন ঘন চোখের পলক ফেলা।
» চোখ খচখচ করা।
চিকিৎসা
অ্যালার্জিজনিত কনজাংটিভাইটিস চিকিৎসার আগে এটি বোঝা জরুরি যে অ্যালার্জির সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব নয়। তবে ওষুধের সাহায্যে অ্যালার্জির লক্ষণগুলো দমন করা যেতে পারে। চুলকানির কারণে চোখ ঘষলে অ্যালার্জির চেয়ে চোখের বেশি সমস্যা হয়। তাই তীব্রভাবে চোখ ঘষা এড়িয়ে চলতে হবে। অ্যালার্জেন এড়িয়ে চলা হলো আদর্শ চিকিৎসা। কিন্তু এটি বলা সহজ হলেও করা কঠিন। কারণ,
এটি জীবনযাত্রা ও জীবনযাত্রার মানকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে। অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস কতক্ষণ স্থায়ী হয়, তা নির্ভর করে ধরন, তীব্রতা ও চিকিৎসার ওপর। চোখে ড্রপের আকারে ওষুধ, যেমন মাস্ট সেল স্টেবিলাইজার, অ্যান্টিহিস্টামিন, স্টেরয়েড অ্যালার্জিজনিত কনজাংটিভাইটিস চিকিৎসার জন্য দরকারি। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে চক্ষুবিশেষজ্ঞের মতামত ছাড়া চোখের ড্রপ শুরু করা উচিত নয়।
প্রতিকার
» যেকোনো ধরনের অ্যালার্জি পরিহার করা।
» বাইরে বের হলে চশমা বা সানগ্লাস ব্যবহার করা।
» হাত ধোয়া ছাড়া চোখে স্পর্শ না করা।
পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. মো. আরমান হোসেন রনি, কনসালট্যান্ট (চক্ষু), দীন মোহাম্মদ আই হসপিটাল, সোবহানবাগ, ঢাকা।