দীর্ঘ ১৫ ঘণ্টার জটিল অপারেশনের পর আলাদা হলো কুড়িগ্রামের মেরুদণ্ড জোড়া লাগানো শিশু নুহা ও নাভা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) গতকাল সোমবার সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত জটিল অস্ত্রোপচার করে তাঁদের পৃথক করা হয়। অস্ত্রোপচার পরবর্তী অবস্থায় নুহা ও নাভা ভালো আছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিশু দুটির সার্বিক অবস্থা তুলে ধরেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, চিকিৎসার শেষ ধাপের অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছেন। নুহা ও নাভা ভালো আছে। তাঁদের এখন নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে।
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেনের নেতৃত্বে ৩৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ১০০ জন মেডিকেল সদস্যের টিম গতকাল সোমবার সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ১৫ ঘণ্টার জটিল কঠিন অস্ত্রোপচার করে এই অসাধ্য সাধন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ২১ মার্চ জন্ম হয় কুড়িগ্রাম জেলার কাঁঠালবাড়ীর পরিবহন শ্রমিক আলমগীর রানা ও তাঁর স্ত্রী নাসরিন দম্পতির সন্তান নুহা ও নাভার। মেরুদণ্ডে জোড়া লাগা—চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় Pygopagus Conjoined twin বলে। জন্মের কয়েক দিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরো স্পাইন সার্জন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেনের অধীনে নুহা ও নাভাকে ভর্তি করা হয়।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকের অপারেশন থিয়েটারে গত বছরের জানুয়ারিতে নুহা ও নাভার প্রথম ধাপের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। প্রথম অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নুহা ও নাভার দেহে টিস্যু বর্ধনকারী ডিভাইস চারটি এক্সপান্ডা সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এই জোড়া লাগানো যমজ শিশুর চিকিৎসায় ১৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেন। অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেনের নেতৃত্বে শিশু সার্জারি, প্লাস্টিক ও রিকন্সট্রাকটিভ সার্জারি, ভাসকুলার সার্জারি, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন, অ্যানেসথেসিয়াসহ সকল বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ নিয়ে এ বোর্ড গঠন করা হয়।